Site icon দ্বিপ্রহর ডট কম

রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।

এবারের বন্যার ক্ষয় ক্ষতি দেখে মনটা কেঁদে উঠেছিল। এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে কিছু অর্থ পাঠিয়েছিলাম বন্যা দুর্গত পরিবারের কাছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগন্য ছিল। তখন ভাবলাম, যদি তাদের জন্য আরো কিছু করা যায় তবে বেশি ভালো হবে। যেই বলা সেই কাজ। আমার ছোট বোন শেখপাড়া রাহাতন নেসা গার্লস স্কুলের(ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা থাকার অন্তর্গত) ছাত্রী। বন্যা দুর্গত মানুষের সাহায্যের জন্য একটা আবেদন লিখে আমার বোনের কাছে দিলাম ওদের স্কুলের প্রধান শিক্ষক “মাসুদ করিম” স্যার এর কাছে। স্যার আবেদন পড়ে সেটা সকল ছাত্রীর উদ্দেশ্যে পড়ে শোনালেন। আমি আবেদনে উল্লেখ্য করেছিলাম সবাই যেন তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে এসে অন্তত দুটি করে খাবার স্যালাইন কিনে দেন। যা অন্তত কিছু বন্যা দুর্গত মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া যায়।

যথারীতি সকল ছাত্রী নিজ উদ্যোগে দুটি তিনটি করে খাবার স্যালাইন কিনে দিলো। এক সময় মোট স্যালাইনের পরিমান দাড়ালো প্রায় ৪০০ প্যাকেটে। বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাড়াতে পেরে সবাই খুব আনন্দিত ছিল।

কিন্তু সে আনন্দ বেশি দিন রইল না। যখন জানা গেল সে স্যালাইন এখনো স্কুলের অফিস কক্ষে পড়ে আছে আর প্রতিদিন দুপুরে তা শিক্ষকেদের খাবার ম্যানুতে যোগ হয়েছে। হাইরে মানুষ। এনারা নাকি মানুষ গড়ার কারিগর!? যে শিক্ষক ৪০০ প্যাকেট স্যালাইন এর লোভ সামলাইতে পারে না তাদের কাছ থেকে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা কি শিক্ষা নিবে?

শুধু তাই নয়। স্কুলে চলছে আরও নানা রকম কার্যক্রম যা আমি বা আপনাদের মাথা ব্যাথার কারণ।

১. এই স্কুল এইবার জে.এস.সি. ও এস. এস. সি. কেন্দ্র হবার ফলে শিক্ষকগন এক রঙ খেলার আয়োজন করে। যেখান থেকে মেয়েরা সারা গায়ে রঙ মেখে পানিতে ভিজে মাঝ দুপুরে বাড়ি ফেরে। তাদের কে প্রস্ন করা হলে তারা উত্তর দেয় “স্যার জোর করে ভিজিয়ে দিয়েছে”। এমনকি নবম শ্রেণীর এক ছাত্রী কাঁদতে কাঁদতে বাসায় ফেরে।
২. ছাত্রীদের কাছ থেকে অনুষ্ঠানের কথা বলে নিয়মিত চাঁদা নেয়া হয়।
৩. স্কুল পরিক্ষা ফিস ও বেতন, রেজিস্ট্রেশন ফি বাড়ানো হচ্ছে হরহামেসাই
৪. স্কুল কর্তৃক নির্ধারিত গাইড না কেনায় তাদেরকে বেত্রাঘাত করা হয়।
৫. স্কুল শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়লে ফেল করানোর হুমকি দেয়া হয়।
৬. এমনকি উপবৃত্তি যাদের পাওয়া উচিত তারা পায় না। পায় যাদের মামা(!) আছেন।

আমাদের কি করার আছে? একবার একজন সাংবাদিক এসেছিলেন। তাকেও আপ্যায়নে সন্তুষ্ট থেকে ফিরে যেতে হয়েছে।

এটি শেখপাড়া রাহাতন নেছা গার্লস স্কুল, ঝিনাইদাহ এর চিত্র। এমন অনিয়ম কি আর কোথাও হচ্ছে না? আমার মনে হয় হরহামেসাই হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে দাড়াবার কেউ কি নেই???

 

ইমরান খান

অক্টোবর ৩, ২০১৬ইং

 

Exit mobile version