জাপান সফরে বেশ খোশমেজাজেই আছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে গলফ খেলছেন, অংশ নিচ্ছেন সুমো টুর্নামেন্টে। অবশ্য খেলাধুলা করে সময় কাটানো বড্ড হিসেবী এ রাষ্ট্রপ্রধানের মূল উদ্দেশ্য নয়। মূলত দুই দেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্য বৈষম্য হ্রাসে আলোচনার উদ্দেশ্যেই তিনি এ সফর শুরু করেছেন। কাঠখোট্টা ব্যবসায়িক আলোচনা শুরুর আগে নিজেদের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক সহজ করে নিতেই সফরের দ্বিতীয় দিন প্রধানমন্ত্রী আবের সঙ্গে গলফ খেলতে দেখা যায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে।
জাপান সফরের দ্বিতীয় দিন রোববার গলফ লনে প্রধানমন্ত্রী আবের সঙ্গে সাক্ষাত করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এসময় ট্রাম্পের পড়নে ছিলো লাল রংয়ের পুলওভার এবং আবে পড়েছিলেন নীল ব্লেজারের সঙ্গে সাদা রংয়ের প্যান্ট। খেলা শুরুর আগে দুজনেই হাস্যেজ্জ্বল ভঙ্গীতে ফটোগ্রাফারদের ক্যামেরায় ধরা দেন। প্রধানমন্ত্রী আবের কার্যালয় থেকে দুজনের তোলা একটি ‘সেলফি’ প্রকাশ করা হয়। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আবে বলেন, তিনি আশা করছেন এ পোস্টটি জাপান-যুক্তরাষ্ট্র মৈত্রিকে ‘আরো বলিষ্ঠ’ করে তুলবে।
গলফ খেলার পর দুই নেতার একটি সুমো টুর্নামেন্টে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। ১৫ দিনের টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত দিনে তারা সেখানে উপস্থিত থাকছেন। প্রথম কোন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে এ টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছেন ট্রাম্প। বিজয়ীর জন্য ৬০-৭০ পাউন্ডের ট্রফিটিকে ‘প্রেসিডেন্ট’স কাপ’ নাম দেয়া হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই জাপান সফর দুইদেশের মধ্যকার শক্তিশালী সম্পর্ককে প্রতিফলিত করছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। তবে বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে দুপক্ষের উত্তেজনার কারনে এই মধুরতা টিকে থাকে কিনা সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
জাপানের বৃহৎ বাণিজ্য উদ্বৃত্ত নিয়ে একেবারেই নাখোশ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। দেশটির সঙ্গে কোন দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পন্ন না হলের জাপানের রফতানিকৃত গাড়িতে উচ্চহারে শুল্কারোপের চিন্তাভাবনা করছেন ট্রাম্প। শনিবার রাতে দুই নেতার সঙ্গে আলোচনার পর চুক্তি বিষয়ে অগ্রগতির কথা উল্লেখ করেন ট্রাম্প।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা আশা করছি চুক্তিটির সুবাদে বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতার কারণ অনুসন্ধান করা যাবে, যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর হবে, নিশ্চিত হবে নিরপেক্ষতা এবং পারস্পরিক সম্পর্ক মজুবত হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘মাত্র এক সপ্তাহ আগে জাপানের বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের গরুর মাংস পুরোমাত্রায় রফতানি প্রবেশাধিকার পেয়েছে। আমরা আপনাদের এই সহযোগিতাকে ধন্যবাদ জানাই। আগামি কয়েক মাসের মধ্যে আমরা বড় ধরনের ঘোষণা দিতে চাই।’
ফক্স নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানে আগামি জুলাইয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির জন্য এ নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারেন ট্রাম্প। দুই দেশের কর্মকর্তারা আশা করছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পর সফরকে কেন্দ্র করে এক্ষেত্রে বড় ধরনের অগ্রগতি হবে।