নিজস্ব প্রতিবেদক: নাচ-গান, উৎসবে-আনন্দে ব্যতিক্রমী ঈদ পূনর্মিলনী উদযাপন করেছে রাজধানী টোকিওর পার্শ্ববর্তী শহর আসিকাগার বাংলাদেশ কমিউনিটি।
রোববার এ ঈদ পূণর্মীলনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে আসিকাগাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বাঙালীরা।
সবার সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে উৎসবে আনন্দে আসিকাগা ঈদ আয়োজনের প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন সুইয়ামা লুবনা। আশিকাগা সিটি ও এর আশপাশের বিভিন্ন শহরের ৬০টি পরিবারের প্রায় ২৫০ জন সদস্য ঈদ আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন। আসিকাগা ঈদ আয়োজন জাপানের কানতো অঞ্চলের বাঙালিদের এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। নতুন নতুন রং বেরঙের শাড়ি ও পাঞ্জাবি পরে সবাই ঈদের আমেজে উপস্থিত হন অনুষ্ঠানে স্থলে।
আরিয়ানের কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠানের। এর পরে ছিল সোনামনিদের নিয়ে প্রথম পর্ব। এই পর্বে ছিল সোনামনিদের ঈদের চিত্রাংকন নিয়ে “রঙ তূলি পর্ব”। সুন্দর চিত্রাংকনের জন্য পুরস্কার লাভ করে আয়ান, মিমনুন, ফৌজি, আরোহা, নাবা ও সোহান। সবার গলায় মেডেল পড়িয়ে দেন শান্তা, বন্যা, সুমনা, সাথি ও নওশী। সবার হাতে বিশেষ পুরস্কার তুলে দেন লেখক-সাংবাদিক ও জাপানের বাংলাদেশ কমিউনিটির পরিচিত মুখ কাজী ইনসানুল হক। জাপানের জনপ্রিয় গান পাপুরিকা সাথে নাচ করে জেসিন, তিরানা, রুজাইনা, লাইবা, আরোহা ও নাবা। পাপুরিকা গানটি পরিবেশন করে সুহান। বাচ্চাদের সবাইকে চকলেট বিতরণ করেন চম্পা।
২য় পর্বের মধ্যাহ্ন ভোজনে ছিল সবার হাতে তৈরি মজাদার খাবারের সমাহার। উল্লেখযোগ্য খাবারের মধ্যে ছিল বিফ ভুনা, রোস্ট, চিকেন, কোর্মা, কাবাব, চাইনিজ ভেজিটেবল, সালাদ ও পোলাও।
ভোজন পর্বের পর শুরু হয় রেইন করিমের গান পরিবেশনায় তৃতীয় পর্বের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আরও গান পরিবেশন করে নাঈম, বন্যা, নওশী, মোস্তফা ও সুমনা-সোহাগ জুটি। ঈদের রেসিপি নিয়ে হাঁসির নাটকে অভিনয় করে বন্যা, সুমনা ও সোহাগ । তিন জনের সাবলীল অভিনয় দর্শকের মন জয় করে নেয়। চমৎকার কবিতা “সেই গল্পটা “আবৃতি করে ইরা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল নৃত্য শিল্পী পুজার ও নাবার নাচ। এই দুইজনের নাচ দর্শকের মন জয় করে নেয়।
আসিকাগা ঈদ আয়োজনে বাংলাদেশ কমিউনিটির (কিতা কানতো) পক্ষ হতে অনেক গুনে গুণান্বিত শিশু শিল্পী আজরিন কারিমা নাবাকে গুনিজন সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। আজরিন কারিমা নাবাকে ক্রেস্ট তুলে দেন কাজী ইনসানুল হক ও দিদার কচি। সেই সময় উপস্তিত দর্শকরা করতালির মাধ্যমে নাবাকে অভিনন্দন জানানো হয়।
বিকেলের নাস্তায় ছিল হাতের তৈরি কাঁচাগোল্লা, কালোজাম, সেমাই, পায়েস, কেক, পুডিং ও সিঙ্গারা। আরও ছিল আসাধারন মজাদার লাচ্ছি।
খাবার পরিবেশন ও অন্যান্য কাজে সাহায্য করেন আলম, মিন্টু, মিলন, সাজ্জাদ, ইমন, মিজান, ফরহাদ, শাহাদাৎ, তাহের, বাবুল ও রাজা।
এর পর আরম্ভ হয় আসিকাগা ঈদ আয়োজন সব চাইতে আকর্ষণীয় পর্ব জাপানের একমাত্র বাংলা ব্যান্ড দল ঝিঁঝিঁ পোকার কনসার্ট। এই অনুষ্ঠানের মাধমে জাপানের একমাত্র বাংলা ব্যান্ড দল “ঝিঁঝিঁ পোকা”র পথ চলা শুরু হয়। কনসার্টটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন, গোলাম মাসুম জিকো। আড়াই ঘন্টা ব্যাপী “ঝিঁঝিঁ পোকা”র মনমুগ্ধকর গান উপস্থিত দর্শকরা মন ভরে উপভোগ করেন। জাপানে বাংলা ব্যান্ড দলের প্রথম কনসার্টকে ঘিরে দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ছিল “ঝিঁঝিঁ পোকা”র এই কনসার্ট নিয়ে। “ঝিঁঝিঁ পোকার সকল সদস্যের অংশগ্রহণ ছিল এক কথা আসাধারণ। কনসার্ট শেষ হয় জাতীয় সঙ্গীতের জ্যামিং এর মাধ্যমে। । এই সময় উপস্থি ত দর্শকরা দাঁড়িয়ে সম্মান জানান জাতীয় সঙ্গীতকে।
কনসাটের আরম্ভ হওয়ার আগে বাংলাদেশ কমিউনিটির (কিতা কানতো) পক্ষ থেকে ফুলের তোড়া দিয়ে ঝিঁঝিঁ পোকাকে বরন করে নেন লুবনা , বন্যা , সুমনা ও চম্পা।
ঝিঁঝিঁ পোকার প্রথম কনসার্ট উপলক্ষে ঝিঁঝিঁ পোকাকে ক্রেস্ট তুলে দেন নোমান, মোস্তফা, সাজ্জাদ, লুৎফুর ও সোহাগ। বিশেষ দুটি সুভেনিয়র ঝিঁঝিঁ পোকাকে তুলেন দেন অনুস্টানের প্রধান অতিথি কাজী ইনসানুল হক ও অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক সুইয়ামা লুবনা। সবার পক্ষ হতে ঝিঁঝিঁ পোকাকে চমৎকার পরিবেশনার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন কাজী ইনসানুল হক।
সব শেষে ছিল আকর্ষণীয় র্যাফেল ড্র। পাঁচ জন ছোট সোনামনি পাঁচটি নাম তুলে বক্স হতে। র্যাফেল ড্র’র পাঁচটি পুরুস্কার জিতে নেন ঊর্মি, রিনি, শওকত, রায়েদ ও লুবনা।
সুন্দর একটি আয়োজনের জন্য কাজী ইনসানুল হকের পক্ষ হতে অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক সুইয়ামা লুবনাকে ফুলের তোড়া তুলে দেন আমাদের সবার মুরুব্বি খালাম্মা।
পুরো অনুষ্ঠানের ছবির দায়িত্ব পালন করেন মনসুর আহমেদ মিলন ও রাহাত বশর।
এস এম নোমান
আসিকাগা, তোচিগি, জাপান/২৪, জুন, ২০১৯