বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সাবেক আমির মাওলানা মুমিনুল হক চৌধুরী (৮৬) শনিবার ভোর পৌনে ৪টায় হাসপাতালে নেয়ার পথে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না-ইলাইহি রাজিঊন।
তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র ও দ্ইু কন্যাসহ বহু-আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন। প্রথম নামাজে জানাজা সকাল ১১টায় কুমিরার আই.আই.ইউ.সি ক্যাম্পাসে, দ্বিতীয় নামাজে জানাজা দুপুর ২টায় চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক প্যারেড ময়দানে, বিকাল ৫টায় সাতকানিয়া উপজেলার চরতি ইউনিয়নের নিজ গ্রামে তৃতীয় নামাজে জানাজা শেষে তাকে স্থানীয় সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রামের প্যারেড মাঠে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় নামাজে জানাজায় ছাত্রলীগের ক্যাডাররা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির সেক্রেটারী জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, চট্টগ্রাম প্যারেড মাঠে অনুষ্ঠিত মাওলানা মুমিনুল হক চৌধুরীর নামাজে জানাজায় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী ক্যাডারদের হামলায় শিক্ষানবিশ আইনজীবী মোঃ জোবায়েরসহ ৫ জন মুসল্লী আহত হওয়ার ঘটনার আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। তারা এতটাই সন্ত্রাসী যে একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় বিশিষ্ট আলেমে দ্বীনের নামাজে জানাজা পর্যন্ত সহ্য করতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, মাওলানা মুমিনুল হক চৌধুরীর জানাজায় হামলার ঘটনার মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগের ইসলাম বিরোধী সন্ত্রাসী চরিত্রই অত্যন্ত নগ্নভাবে প্রকাশিত হয়েছে। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকার মধ্য দিয়ে তাদের প্রতিহিংসাপরায়ণ কর্মকাণ্ড অত্যন্ত নগ্নভাবে প্রকাশিত হয়েছে। এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা কখনো কারো কাম্য হতে পারে না। তিনি এ ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে যথাপোযুক্ত শাস্তি প্রদান করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
শোক: মাওলানা মুমিনুল হক চৌধুরীর ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মকবুল আহমাদ বলেন, মাওলানা মুমিনুল হক চৌধুরীর ইন্তেকালে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তার ইন্তেকালে আমি একজন প্রবীণ সহকর্মী ও সাথীকে হারালাম। বর্তমানে বৃহৎ চট্টগ্রাম অঞ্চলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক কার্যক্রমের উন্নতি ও অগ্রগতির পেছনে তার বিরাট অবদান রয়েছে।
তিনি একজন অত্যন্ত সাহসী ও দক্ষ সংগঠক ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তিনি আপোষহীন ভূমিকা পালন করে গেছেন। তার হাতে গড়ে উঠা নেতৃবৃন্দই বর্তমানে চট্টগ্রাম অঞ্চলে জামায়াতের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার অবদানের কথা আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। তার ইন্তেকালে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে তার সহজে পূরণ হওয়ার নয়।
শোকবাণীতে তিনি বলেন, হযরত মাওলানা মুমিনুল হক চৌধুরী (রাহিমাহুল্লাহ)-কে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা ক্ষমা ও রহম করুন এবং তাকে নিরাপত্তা দান করুন। তাকে সম্মানিত মেহমান হিসেবে কবুল করুন ও তার কবরকে প্রশস্ত করুন। তার গুণাহখাতাগুলোকে নেকিতে পরিণত করুন। তার জীবনের নেক আমলসমূহ কবুল করে তাকে জান্নাতুল ফিরদাউসে স্থান দান করুন। শোকবাণীতে তার শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজন ও গুণগ্রাহীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাদেরকে এ শোকে ধৈর্য ধারণ করার তাওফিক দান করুন। । বিজ্ঞপ্তি।