নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান তুলেছে বাংলাদেশ, তারপরেও জয়ের দেখা মিলল না। নটিংহ্যামের ট্রেন্ট ব্রিজে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৪৮ রানে হারলো বাংলাদেশ।
দুই দলের মাঝে পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নার।
টসে জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। পাঁচ উইকেটে তারা সংগ্রহ করে ৩৮১ রান।
এর মধ্যে ১৪৭ বলে ১৬৬ রান তুলেছেন ডেভিড ওয়ার্নার।
অথচ এই ডেভিড ওয়ার্নার তাঁর ইনিংসের ১০ রানের মাথায় একটি ক্যাচ-এর সুযোগ দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ দলের সাব্বির রহমান সেটি তালুবন্দি করতে পারেননি।
ক্রীড়া সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রনি বলেন, ”মাঠে বোলিং বা ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশের যে ক্ষমতা, সেটা মাঠে ঠিকমতো দেখা যাচ্ছে না। যেমন ওয়ার্নারের ক্যাচটি সাব্বির রহমান ধরতে পারলেন না। এরকম সুযোগ তো সবসময় আসবে না।”
এরপর বাংলাদেশ দলের বোলারদের বেধড়ক পিটিয়েছেন ওয়ার্নার।
বাংলাদেশের পক্ষে সৌম্য সরকার উইকেট নিয়েছেন তিনটি। আরেকটি উইকেট পেয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান।
অস্ট্রেলিয়ার ৩৮১ রান রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশে সংগ্রহ করতে পেরেছে ৩৩৩ রান। একমাত্র সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন মুশফিকুর রহিম, যার সংগ্রহ ১০২ রান।
প্রথমে তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান, পরে মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ জুটি বেধে দলকে অনেকদূর টেনে নিয়ে গেছেন। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিশাল রানের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি দলটি।

ক্রীড়া বিশ্লেষক আরিফুল ইসলাম বলছেন, ”সর্বোচ্চ রান তোলায় ব্যাটিংয়ের দিক থেকে বাংলাদেশ ক্রেডিট দাবি করতে পারে। কিন্তু এই ম্যাচটিতে যে জয় হবে না, সেটা মাঝপথেই বোঝা যাচ্ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ যে শক্ত লড়াই করতে পারে, সেই মনোভাবটি দেখাতে পেরেছে। প্রায় শেষ পর্যন্ত তারা নিজেদের ম্যাচে ধরে রেখেছিল।”
তিনি জানান, ট্রেন্ট ব্রিজের উইকেটে এমনিতেই রান বেশি ওঠে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ইংল্যান্ড ৪৪৪ রান করেছিল, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪৮১ রান করেছিল।
৩৫ ওভার পর্যন্ত দুই দলের রান ছিল সমান, ২০৮ রান। এরপরে বাকি ১৫ ওভারে অস্ট্রেলিয়া ১৭৩ রান তুললেও তেমন দক্ষতা দেখাতে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ফিঞ্চ করেছেন ৫৩, ওয়ার্নার ১৬৬, খাওয়াজা ৮৯, ম্যাক্সওয়েল ৩২। আর বাংলাদেশের পক্ষে তামিম ৬২, সাকিব ৪১, লিটন ২০, মাহমুদউল্লাহ ৬৯ রান করেছেন।
প্লেয়ার অব দ্যা ম্যাচ হয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার।

বিশ্বকাপের প্রথম পর্বে বাংলাদেশের সামনে আরো তিনটি ম্যাচ রয়েছে। আফগানিস্তান, ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে তিনটি খেলা রয়েছে।
ক্রীড়া বিশ্লেষক আরিফুল ইসলাম বলছেন, সেমিফাইনালের কথা বললে বলতে হবে, এখন কাজটি খুবই কঠিন।
কারণ এখান থেকে সেমিফাইনালে যেতে হলে পরের তিনটি ম্যাচেই জিততে হবে, সেই সঙ্গে অন্যান্য দলের খেলার ফলাফলের ওপরেও নির্ভর করতে হবে।
তবে তিনি বলছেন, এই ম্যাচের মাধ্যমে যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে, সবকিছু অনুকূল থাকলে তার ফলে হয়তো নির্দিষ্ট দিনে বাংলাদেশ ভালো কিছু সম্ভব করে দেখাতে পারে।