1. mdabirhossain.6894@gmail.com : Abir Hossain : Abir Hossain
  2. info@diprohor.com : admin :
  3. bappi.kusht@gmail.com : Bappi Hossain : Bappi Hossain
  4. biplob.ice@gmail.com : Md Biplob Hossain : Md Biplob Hossain
  5. mahedi988.bd@gmail.com : Mahedi Hasan : Mahedi Hasan
  6. mamunjp007@gmail.com : mamunjp007 :
  7. media.mrp24@gmail.com : এস এইচ এম মামুন : এস এইচ এম মামুন
  8. rakib.jnu.s6@gmail.com : Rakibul Islam : Rakibul Islam
  9. mdraselali95@gmail.com : Rasel Ali : Rasel Ali
  10. rockyrisul@gmail.com : Rocky Risul : Rocky Risul
  11. rouf4711@gmail.com : আব্দুর রউফ : আব্দুর রউফ
  12. sohan.acct@gmail.com : Sohanur Rahman : Sohanur Rahman
তিন তরুণের টাকার ভয়ংকর নেশা | দ্বিপ্রহর ডট কম
মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:০০ পূর্বাহ্ন

তিন তরুণের টাকার ভয়ংকর নেশা

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট টাইম: মঙ্গলবার, ১৮ জুন, ২০১৯
  • ৮১৪ বার পঠিত
তিন তরুণের টাকার ভয়ংকর নেশা

বকুল, রাসেল আর তুষার। তিনজনই বন্ধু। প্রত্যেকের বয়স ২০ থেকে ২২ বছর। তিনজনই থাকতেন সাভারের শ্যামপুর বাজার এলাকায়। ১৫ দিনের ব্যবধানে দুই অটোরিকশাচালককে খুন করেন এই তিন বন্ধু। আর হত্যার চেষ্টা চালান আরও এক অটোরিকশাচালককে।

হত্যার দায় স্বীকার করে তিনজনই ঢাকার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সেখানে উঠে এসেছে তিন বন্ধুর অপরাধের তথ্য। টাকা আয়ের নেশাই তাঁদের এমন অপরাধের পথে নামিয়েছে বলে পুলিশের কাছে বলেছেন তাঁরা।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তারিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অল্প সময়ের ব্যবধানে তিন বন্ধু দুই চালককে খুন করে অটোরিকশা ছিনিয়ে নিয়েছেন।

গত ২৭ মার্চ কেরানীগঞ্জের হজরতপুরে অটোরিকশাচালক জাকির হোসেনের (৩৬) লাশ উদ্ধার করা হয়। এই খুনের পাঁচ দিন পর (২ এপ্রিল) সাভারের ভাকুর্তায় আরেক অটোরিকশাচালক মতিউর রহমানের (২৬) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মতিউর খুনের নয় দিন পর ঝাউচরে মাইনুল (২৬) নামের অটোরিকশাচালককে কুপিয়ে জখম করে তাঁর অটোরিকশা নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় সাভার থানায় দুটি এবং কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়। এই তিনটি ঘটনায় বকুল, রাসেল আর তুষার জড়িত।

গত রোববার রাসেল তিনটি ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। এর আগে জবানবন্দি দেন তুষার ও বকুল। তিনজনই এখন কারাগারে। 

তিন বন্ধুর খুনি হয়ে ওঠা
বকুল আর তুষার বাল্যবন্ধু। দুজনের বাড়ি বগুড়ার ধুনট উপজেলার চরখুকশিয়া গ্রামে। প্রাইমারি স্কুলে তাঁরা একই সঙ্গে লেখাপড়া করতেন। কয়েক বছর আগে তুষার মায়ের সঙ্গে ঢাকার সাভারে চলে আসেন। তাঁর মা স্থানীয় গার্মেন্টসে চাকরি নেন। তুষার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাতে শুরু করেন। অটোরিকশা চালাতে গিয়ে পরিচয় হয় বকুলের সঙ্গে। বকুলও অটোরিকশা চালান। তাঁর বাবা-মা দুজনে সাভারের শ্যামপুর বাজার এলাকার গার্মেন্টসে চাকরি করেন।

বকুল আর তুষার দুই বছর ধরে অটোরিকশা চালিয়ে আসছিলেন। মাস ছয়েক আগে বগুড়া থেকে ঢাকায় আসেন রাসেল। তুষারের মাধ্যমে বকুলের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়।

তদন্ত কর্মকর্তা সাভার থানার এসআই তারিকুল ইসলাম রোববার বলেন, রাসেল, তুষার আর বকুল তিনজনই ক্রাইম পেট্রল দেখে অটোরিকশা ছিনতাই করার পরিকল্পনা করেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনজন স্বীকার করেছেন, দ্রুত তাঁরা পয়সার মালিক হতে চান। নিজেরা কেন পরের অটোরিকশা ভাড়ায় চালাবেন। নিজেরাই হবেন অটোরিকশার মালিক। এই চিন্তা থেকেই তাঁরা ২৭ মার্চ প্রথম অটোরিকশাচালক জাকিরকে ধারালো চাকু দিয়ে হত্যা করে তাঁর অটোরিকশা ছিনিয়ে নেন। এরপর আরও একজন অটোরিকশাচালককে খুন করেন। সব কটি ঘটনাই ছিল ক্লুলেস। সর্বশেষ ১১ এপ্রিল সাভারের মাইনুলকে গুরুতর জখম করে অটোরিকশা ছিনিয়ে নেন তিন বন্ধু। এই ছিনতাইয়ের সূত্র ধরে দুই অটোরিকশাচালক খুনের রহস্য বেরিয়ে আসে।

যাত্রী সেজে খুন 
অটোরিকশাচালক জাকির হোসেন তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে থাকতেন কেরানীগঞ্জের আলীপুর গ্রামে। সেদিন রাত আটটায় অটোরিকশা নিয়ে গ্যারেজ থেকে বেরিয়ে পড়েন।

নিহত জাকিরের ভাই ও মামলার বাদী আবদুল কাদির প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাই এবং তিনি কেরানীগঞ্জের একই বাসায় ভাড়া থাকেন। যেখানেই থাকুক রাত ১২টার মধ্যে তাঁর ভাই বাসায় চলে আসেন। রাতে বাসায় না ফেরায় ফজরের আজানের সময় ভাইয়ের মুঠোফোনে কল দেন। ফোনে রিং বাজলেও কেউ ধরছিল না। তখন আশপাশের এলাকায় খোঁজখবর করতে থাকেন। লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারেন, কদমতলীর দেড় শ গজ দক্ষিণে কলাতিয়া টু সাভারের হেমায়েতপুরগামী সড়কের পাশে একটা লাশ পড়ে আছে। ওই লাশটি ছিল তাঁর ভাইয়ের।

১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রাসেল রোববার আদালতকে বলেন, তিনি এবং তাঁর বকুল কেরানীগঞ্জের কদমতলী সেতুর কাছে যান। সেখান থেকে একটা অটোরিকশা ভাড়া করেন। কিছু দূর যাওয়ার পর বকুল তাঁকে নির্দেশ দেয় ওই রিকশাচালককে আঘাত করতে। তিনি তখন চাকু দিয়ে আঘাত করেন। পরদিন বকুল তাঁকে ২ হাজার টাকা দেয়।

দুই সন্তানের জনক অটোরিকশাচালক মতিউর রহমান সাভারের কাঁঠালতলা কবরস্থান রোড এলাকায় ভাড়া থাকতেন। তিনি অটোরিকশা চালিয়ে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতেন।

নিহত মতিউরের ভাই মিজানুর রহমান রোববার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাই সেদিন (২ এপ্রিল) বিকেলে বাসা থেকে অটোরিকশা নিয়ে বেরিয়ে যান। রাত ১০টার দিকে তাঁদের বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক মানিক এসে তাঁকে জানান, মতিউরের লাশ পড়ে আছে ভাকুর্তার পরিত্যক্ত এবিএম কোম্পানির ইটভাটার সামনের সড়কের পাশে। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে গিয়ে দেখেন তাঁর ভাই মতিউরের লাশ। দেহের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের জখম।

এই খুনের মামলায় আসামি রাসেল রোববার আদালতকে বলেন, সাভারের শ্যামপুর বাজারে বন্ধু বকুলের সঙ্গে দেখা হয়। সেখান থেকে অটোরিকশায় করে ইটভাটার কাছে আসেন। তখন চালককে আঘাত করেন তিনি। চালক পড়ে যান।

অটোরিকশাচালক মাইনুল সেদিন (১১ এপ্রিল) সাড়ে ১০টায় সাভারের হেমায়েতপুরের পদ্মার মোড় থেকে দুজন অজ্ঞাত যাত্রীকে নিয়ে রওনা হন। 
মামলার বাদী সালাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মাইনুল তাঁর অটোরিকশা ভাড়ায় নিয়ে চালান। রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে মাইনুল ঝাউচরের হাবিব কোম্পানির এবিএম ইটখোলায় আসার পর ওই দুই যাত্রী গাড়ি থামাতে বলেন। গাড়ি না থামালে একজন যাত্রী মাইনুলকে টেনেহিঁচড়ে নামান। আরেকজন ধারালো চাকু দিয়ে আঘাত করেন। তখন যাত্রীবেশী ওই দুই ছিনতাইকারী অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যান।

এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানা খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, চালক মাইনুলকে আঘাত করে অটোরিকশা ছিনিয়ে নেওয়ার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে তিনি যান। পরে তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার কয়েক দিন পর জানতে পারেন, মাইনুলকে মেরে যে অটোরিকশা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল, তা রাস্তায় চলছে। ওই অটোরিকশাচালককে আটক করার পর জানতে পারেন, তুষার আর রাসেল ওই অটোরিকশা ছিনিয়ে বিক্রি করে দেন।

সাভার থানার এসআই তারিকুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় তুষার জানান, কেরানীগঞ্জের জাকির এবং সাভারের মতিউর খুনে তাঁরা তিন বন্ধু জড়িত। এরপর সিরাজগঞ্জ থেকে বকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর গত শনিবার বগুড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয় রাসেলকে।

পুলিশ কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম বলেন, দুজন নিরীহ অটোরিকশাচালককে খুন করার পর আরও একজন চালককে হত্যার চেষ্টা চালান। অটোরিকশা বিক্রি করে দিয়ে তাঁরা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। রাতের অন্ধকারে খুনের ঘটনাগুলো ঘটিয়ে তাঁদের ধারণা জন্মেছিল, তাঁরা হয়তো ধরা পড়বেন না। সব কটি ঘটনায় তাঁরা ঘটিয়েছেন রাতে এবং নির্জন স্থানে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দ্বিপ্রহর ডট কম-২০১৭-২০২০
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazardiprohor11