শেষ কয়েকদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হেরে গেলেন আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
শনিবার (১৩ জুন) বেলা ১১টা ১০ মিনিটে রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
হাসপাতালের পরিচালক ও সিইও ডা. আল ইমরান চৌধুরী রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
করোনা পজিটিভ নিয়ে ব্রেন স্ট্রোক করার পর অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর আর তার জ্ঞান ফেরেনি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভেন্টিলেটরের সহায়তায় কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছিলেন। তার শরীরের কোনো অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কাজ করছিল না। অস্ত্রোপচারের পর থেকে চিকিৎসকের নিবিড় পর্যবেক্ষণে ডিপ কোমায় থাকা নাসিমের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পরিস্থিতি ছিলো অপরিবর্তনশীল।
মোহাম্মদ নাসিমের চিকিৎসায় গঠন করা ১৩ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ডের পরিবর্তে নতুন মেডিক্যাল বোর্ডও গঠন করা হয়। দ্বিতীয়বারের করোনা পরীক্ষায় তার ফল নেগেটিভ আসে। কিন্তু শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল।
রক্তচাপজনিত সমস্যা নিয়ে গত ১ জুন হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। ওই দিনই তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর ৪ জুন কিছুটা উন্নতি হলেও ৫ জুন ভোরে স্ট্রোক করেন তিনি। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত সমস্যার কারণে দ্রুত অস্ত্রোপচার করে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়।
গত শনিবার (৬ জুন) মোহাম্মদ নাসিমের চিকিৎসায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য ও প্রখ্যাত নিউরো সার্জন অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়াকে প্রধান করে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি বোর্ড গঠন করা হয়। এরপর বৈঠক করে মোহাম্মদ নাসিমকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মোহাম্মদ নাসিম সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। এছাড়া, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মুখপাত্রও তিনি।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে নিহত জাতীয় চার নেতার একজন শহীদ এম মনসুর আলীর ছেলে মোহাম্মদ নাসিম আওয়ামী লীগের ১৯৯৬-২০০১ সরকারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান তিনি।