‘জীবনের গল্প আছে বাকী অল্প’ এমন গানের কথার মতো গল্প বাকী রেখেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন বরেণ্য সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর।
সোমবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজশাহীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন এন্ড্রু কিশোরের শিষ্য মোমিন বিশ্বাস।
গতকাল (৫ জুলাই) থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। সোমবার (৬ জুলাই) সকালের দিকে তার অবস্থা আরো খারাপের দিকে যায়। তারপর রাজশাহীতে তার বোনের ক্লিনিকে আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
কিডনি ও হরমোনজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন এন্ড্রু কিশোর। এছাড়া ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন এই শিল্পী। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুর যান তিনি। দীর্ঘ নয় মাস পর গত ১১ জুন রাত আড়াইটায় সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরেন এন্ড্রু কিশোর।
ব্যয়বহুল এই চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শিল্পীর পরিবারের পাশাপাশি সংগীতশিল্পী, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, বেশকিছু প্রতিষ্ঠান এবং প্রবাসীরা এগিয়ে এসেছিলেন।
রাজশাহীতে জন্ম এন্ড্রু কিশোরের। সেখানেই কেটেছে তার শৈশব ও কৈশোর। রাজশাহীর আবদুল আজিজ বাচ্চুর কাছে সংগীতের প্রাথমিক পাঠ শুরু করেন এন্ড্রু কিশোর। এক সময় গানের টানে ছুটে আসেন রাজধানী ঢাকায়। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর রেডিওর তালিকাভুক্ত শিল্পী হন তিনি।
সংগীত ক্যারিয়ারে অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। এন্ড্রু কিশোরের গাওয়া প্রথম চলচ্চিত্রের গান ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’। ১৯৭৭ সালে এটি ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রে ব্যবহার করা হয়। তার পরের গল্প কারো অজানা নয়।
এন্ড্রু কিশোরের গাওয়া শ্রোতাপ্রিয় গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার বুকের মধ্যখানে’, ‘তুমি আমার জীবন আমি তোমার জীবন’, ‘ভালো আছি ভালো থেকো’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘বেদের মেয়ে জোছনা আমায় কথা দিয়েছে’ প্রভৃতি।