আলোচিত নানা অভিযোগে অভিযুক্ত যশোরের আইনজীবী আমির হোসেনের বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহারের প্রতিবাদ ও স্বীদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে যশোর জেলা আইনজীবী সমিতিতে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
৮০ জন আইনজীবীর স্বাক্ষরিত আবেদন সোমবার যশোর জেলা আইনজীবী সমিতি বরাবর দাখিল করেছে ।
একই সাথে স্বীদ্ধান্ত বাতিল করে বিষয়টি সমিতির সাধারণ সভায় উপস্থাপনের দাবি জানিয়েছেন তারা।
আবেদনে আইনজীবীরা উল্লেখ করেন, আমিরের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতন, অর্থ আত্মসাৎ, আদালতের নথি জালিয়াতি সহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।
তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা বিচারাধীন, জেল খেটেছেন একাধিকবার। এরআগে তিনবার যশোর জেলা আইনজীবী সমিতি তাকে বরখান্ত করেন। অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে তার বিরুদ্ধে কৈফয়তও তলবের নজির রয়েছে।
তার বিরুদ্ধে যশোরের বিভিন্ন এলাকায় মিছিল ও মানববন্ধনও হয়েছে। একাধিকবার আমিরের শাস্তির দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলনও হয়েছে।
শতাধিক আইনজীবী তার বিরুদ্ধে লিখিত ভাবে সমিতিতেও অভিযোগ দেয়া হয়েছে তারপরেও আমিরের পার পেয়ে যাওয়ার বিষয়টা নিয়ে কৌতুহলের জন্ম নিয়েছে।
এমতাবস্তায়, নির্বাহী কমিটির মিটিং এর স্বীদ্ধান্ত সঠিক নয় দাবী করে বিষয়টি সমিতির সাধারণ সভায় উত্থাপনের জোড় দাবি জানান।
তারা আরো উল্লেখ করেন, আমিরের কর্মকান্ডে শুধু সমিতিরই নয় পুরো আইনজীবী সমাজের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
এ দ্বায়ভার প্রত্যেকটা আইনজীবীর বহন করতে হচ্ছে। সুতরায় সবারই মতামতের বিষয়টা সমিতির সদস্যদের মতামতের ও মূল্য দেয়া উচিত বলে সাধারণ আইনজীবীদের অভিমত।
এ আবেদনে সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম, সাবেক পিপি আবুল হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী ফরিদুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী, সৈয়দ রুহুল কুদ্দুস কচি, জি এম আবু মিজানুর রহমান মিন্টু, এসএম বদরুজ্জামান পলাশ, খন্দকার দেলোয়ার হোসেন, আফজাল হোসেন, জিএম আবু মুসা, সহ ৯০ আইনজীবী স্বাক্ষর করেন।
উল্লেখ্য, করোনার এ মহামারির মধ্যেই পহেলা জুলাই অনুষ্ঠিত হয় জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির জরুরী সভা। সভায় বর্তমান সময়ের আলোচিত কিছু বিষয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ন স্বীদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভার এজেন্ড ছিল নানা অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে সমিতি থেকে বরখান্ত হওয়া তিন আইনজীবীর সাজা প্রসঙ্গে।
সভায় অভিযুক্ত হয়ে সাজা খাটার পর দুইজনের বহিস্কার আদেশ প্রত্যাহারের স্বীদ্ধান্ত নেয়া হয়। তারমধ্যে রয়েছে যশোরের সমালোচিত আমির হোসেন ও সৈয়দ কবীর হোসেন জনি।
এছাড়া সভায়, আইনজীবী রুহিন বালুজের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমানিত হলে তিনি দ্বায় স্বীকার করে টাকা ফেরত দেয়ার স্বার্থে অভিযোগটি নিস্পত্তি করার স্বীদ্ধান্ত নেয়া হয়।
তবে, এর বাইরে বরখাস্তকৃত আইনজীবী মিজানুর রহমান বিপ্লবের আদেশ বহাল রাখা হয়। সভায় আইনজীবী আমিরের বহিস্কার আদেশ প্রত্যাহারের স্বীদ্ধান্ত গ্রহনের খবর প্রকাশ পাওয়ার পরই সাধারণ আইনজীবীরা ক্ষুব্ধ হয়ে সমিতিতে লিখিত আবেদন জমাদেন।
এ বিষয়ে যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এম ইদ্রিস আলী জানান, আবেদনের বিষয়টি তিনি জানেন। কিন্তু সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বারে আসছেন না।
ফলে এখনই কোনো স্বীদ্ধান্ত গ্রহন করা যাচ্ছেনা।