ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি (৮৪) মারা গেছেন। সোমবার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রণব মুখার্জির ছেলে অভিজিৎ মুখার্জি এক টুইট বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন।
টুইট বার্তা তার ছেলে লিখেছেন, ‘খুবই দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমার বাবা প্রণব মুখার্জি মারা গেছেন। চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। মানুষের কাছ থেকে প্রার্থনা পেয়েছি। এরপরও বাবাকে ফেরাতে পারিনি। আমি আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই পাশে থাকার জন্য।’
এদিকে সাবেক এ রাষ্ট্রপতির মৃত্যুর বিষয়টি টুইট বার্তা জানিয়ে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন ভারতের বর্তমান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ টুইটে লিখেছেন, ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখার্জির মৃত্যুর খবরে খুবই মর্মহত হয়েছি। তার মৃত্যুর ক্ষতি অপূরণীয়। আমি তার পরিবার-আত্মীয়স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষিদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি। ‘
মোদি তার টুইটে লিখেছেন, ‘ভারতরত্ন শ্রী প্রণব মুখার্জির মৃত্যুতে পুরো ভারত শোক প্রকাশ করছে। তিনি আমাদের জাতীয় উন্নয়নের ধারায় অনন্য স্বাক্ষর রেখে গেছেন। একজন অসামান্য জ্ঞানী, একজন গৌরবময় রাষ্ট্রনায়ক, যিনি সব ধরনের রাজনীতিতে সম্মানিত এবং সমাজের সব অংশে প্রশংসিত ছিলেন।’
এর আগে সকালে এক মেডিক্যাল বুলেটিনে বলা হয়েছিল, ‘গতকালের (রোববার) চেয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে তার সেপটিক শক দেখা দিয়েছে এবং তার পর্যবেক্ষণ করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল। তিনি গভীর কোমায় আচ্ছন্ন রয়েছেন এবং ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রয়েছেন।’
গত ১০ অগস্ট দিল্লির আর্মি’স রিসার্চ অ্যান্ড রেফারেল হাসপাতালে প্রণবকে ভর্তি করা হয়েছিল। পরীক্ষার সময় দেখা গিয়েছিল, তার মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।
এর আগে তার করোনা রিপোর্টও পজিটিভ এসেছিল। অস্ত্রোপচারের পর থেকেই ভেন্টিলেশনে ছিলেন। কখনও কখনও শারীরিক অবস্থার উন্নতি খবর মিললেও মাঝে মধ্যে তার অবস্থা আরও জটিল হয়েছে। মূত্রাশয় সংক্রান্ত সমস্যা এবং ফুসফুসে সংক্রমণও ছিল তার।
২০১২ সালে ভারতের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন প্রণব মুখার্জি। দায়িত্ব পালন করেছেন ২০১৭ সাল পর্যন্ত। রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে একে একে পালন করেছেন প্রতিরক্ষা (২০০৪-০৬), পররাষ্ট্র (২০০৬-০৯) ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের (২০০৯ এবং ২০১২ সাল) মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। ২০১৯ সালে ভারত রত্ন সম্মানে ভূষিত হন।