Site icon দ্বিপ্রহর ডট কম

রিফাত হত্যা মামলায় স্ত্রী মিন্নিসহ ৬ জনের ফাঁসির আদেশ

বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ৬ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া এ মামলায় ৪ জনকে খালাস প্রদান করা হয়েছে।

বুধবার ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুর পৌনে ২টার দিকে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ভূবন চন্দ্র হালদার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

১০ আসামির মধ্যে মুসা পলাতক এবং মিন্নি জামিনে রয়েছেন। মুসা ব্যতীত বাকিরা রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন।

এর আগে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে র‍্যাব ও পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় এ মামলায় কারাগারে থাকা প্রাপ্তবয়স্ক আট আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।

রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আসামিরা হলেন- রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান, মো. মুসা, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন। এদের মধ্যে মো. মুসা পলাতক রয়েছেন।

তার আগে সকালে আদালতে হাজির হন নিহত রিফাতের স্ত্রী ও এ মামলার অন্যতম আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। জামিনে থাকা মিন্নি সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে তার বাবার সঙ্গে মোটরসাইকেলে চড়ে আদালতে হাজির হন।

এদিকে রিফাত হত্যা মামলার রায়কে ঘিরে বরগুনার আদালত প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টনী গড়ে তুলেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার রায়েকে ঘিরে বরগুনা শহর ও আদালত চত্বরে কড়া নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

মামলার রায় শুনতে আদালতে রিফাতের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও মামলার আইনজীবী, গণমাধ্যমকর্মী ও আসামিদের স্বজনরা হাজির হয়েছেন। আদালত চত্বরে কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও উৎসুক মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর এ মামলার দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামান রায়ের জন্য আজ দিন ধার্য করেন।

২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শত শত লোকের উপস্থিতিতে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে (২৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরে রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিওতে দেখা যায়, ধারালো দা দিয়ে রিফাতকে একের পর এক কোপ দিচ্ছেন দুই যুবক। ওই সময় রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি দুই যুবককে বারবার প্রতিহতের চেষ্টা করছেন। কিন্তু সন্ত্রাসীদের সঙ্গে লড়েও স্বামীকে বাঁচাতে পারেননি স্ত্রী মিন্নি। গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশালে নেয়ার পর মারা যান রিফাত।

এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করা হয়। এরপর আরেকটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ওই ভিডিও দেখে মিন্নির বাবার বিরুদ্ধেও মামলা করার কথা জানান রিফাতের বাবা।

এরই মধ্যে মামলার প্রধান সাক্ষী মিন্নিকে গত ১৬ জুলাই রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের তদন্তে স্বামী হত্যায় ফেঁসে যান মিন্নি। পরদিন তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। দুদিন পর মিন্নিকে আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

Exit mobile version