Site icon দ্বিপ্রহর ডট কম

হঠাৎ অসুস্থতায় জরুরি চিকিৎসাঃ (আট) – তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য সেবা বা প্রাথমিক স্বাস্থ্য প্রতিবিধানের মূলনীতি

তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য সেবা বা প্রাথমিক স্বাস্থ্য প্রতিবিধানের মূলনীতি মনে রাখতে হলে সাদামাটাভাবে চারটি বিষয় মনে রাখতে হবে। এটি বেশ দরকারী। 

১. অসুস্থতার ইতিহাস জানাঃ কেমন করে অসুস্থ হলো তার বিস্তারিত বিষয় জেনে নেওয়াটা একটি জরুরি বিষয়। এটি তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের জন্যে যেমন জরুরি তেমনি রোগীকে হাসপাতালে স্থানান্তরের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় তাৎক্ষণিক অসুস্থতার পিছনে নানা ধরণের দূরভিসন্ধি থাকে যেমন, তা আত্নহত্যামূলক বা পরহত্যামূলক হতে পারে এবং যা নিয়ে পরবর্তীতে কেস-কামারী বা থানা-পুলিশ পর্যন্ত হতে পারে, এ কারণেও এর বাড়তি একটি গুরুত্ব আছে। তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারীকে স্মরণ রাখতে হবে যেন অসুস্থতার ইতিহাস জানতে গিয়ে আবার দ্রুত সেবা প্রদান ব্যহত না হয়। কখনও কখনও অসুস্থ ব্যক্তি এমন পরিমানে অসুস্থ থাকতে পারেন যে, তিনি তার অসুস্থতার ইতিহাস বলতে পারারমত অবস্থায় নেই। বোবা, কালা বা বাচ্চাও হতে পারে। এ সব ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষদর্শী বা নিকটজনের সাহায্য নিয়ে যতদূর সম্ভব অসুস্থতার ইতিহাস জানার চেষ্টা করা উচিৎ।     

২. অসুস্থতার লক্ষণ (Sign)দেখাঃঅসুস্থতার দৃশ্যমান অবস্থা অর্থাৎ চোখে দেখা যায় এমন কিছুর লক্ষণ শরীরের কোথাও আছে কি না তা পরীক্ষা করাটা জরুরি। তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের সময় ঠিক কোন বিষয়টিকে প্রথম এবং বেশী গুরুত্ব দিতে হবে সেটির সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে এটি বিশেষ সহায়ক। লক্ষণ দেখে অনেক সময় অসুস্থতার কারণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ যাচাই করে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়। অসুস্থতার পরিমান সম্পর্কে ধারণা জন্মে এবং তার ব্যাবস্থাপনা কতটা সাদ্ধের মধ্যে, যদি সাদ্ধের মধ্যে না থাকে তবে কোথায়, কি ভাবে স্থানান্তর করতে হবে সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে। যেমন – কেটে যাওয়া, ফুলে ওঠা, ভেঙ্গে যাওয়া ইত্যাদির লক্ষণ ।

৩. অসুস্থতার উপসর্গ (Symptom) অনুভব করা ও শোনাঃ অসুস্থতার দৃশ্যমান অবস্থারমতো অসুস্থতার অদৃশ্যমান অবস্থা অর্থাৎ চোখে দেখা যায় না অথচ অনুভব করা যায় এমন কিছুর লক্ষণ শরীরের কোথাও আছে কি না তা পরীক্ষা করাটাও সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ। অসুস্থ ব্যক্তি যদি তার অসুস্থতা বর্ণনা করারমতো অবস্থায় থাকে তবে তার কাছ থেকে অদৃশ্যমান অবস্থার বর্ণনা শুনতে হবে। যদি অসুস্থ ব্যক্তি এমন পরিমান অসুস্থ থাকে যে, সে তার অসুস্থতার বিবরণ দিতে অক্ষম অথবা যিনি অসুস্থ হয়েছেন তিনি বোবা, কালা বা ছোট বাচ্চা, সে ক্ষেত্রে উপসর্গসমুহ অনুভব করে দেখতে হবে এবং প্রত্যক্ষদর্শী বা নিকটজনের সাহায্য নিয়ে যতদূর সম্ভব এ বিষয়ে জানার চেষ্টা করতে হবে। উপসর্গের মধ্যে ব্যাথা, জ্বর, খারাপ লাগা, ভাললাগা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ।

৪. অসুস্থতার লক্ষণ ও উপসর্গ মিলিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেওয়াঃ যদিও তাৎক্ষণিক অসুস্থতায় খুবই দ্রুত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের বিষয়টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ, তার পরেও যত দ্রুত সম্ভব অসুস্থতার লক্ষণ ও উপসর্গ সঠিকভাবে জেনে নেয়া উচিৎ এবং তার পরে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ। তাহলে চিকিৎসা ক্রুটিমুক্ত হবার সম্ভাবনা বেশী থাকবে।   

(যুক্তিযুক্তের লিখিত এবং অন্বেষা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত ‘হঠাৎ অসুস্থতায় জরুরি চিকিৎসা’ গ্রন্থ থেকে সঙ্কলিত)   

Exit mobile version