1. mdabirhossain.6894@gmail.com : Abir Hossain : Abir Hossain
  2. info@diprohor.com : admin :
  3. bappi.kusht@gmail.com : Bappi Hossain : Bappi Hossain
  4. biplob.ice@gmail.com : Md Biplob Hossain : Md Biplob Hossain
  5. mahedi988.bd@gmail.com : Mahedi Hasan : Mahedi Hasan
  6. mamunjp007@gmail.com : mamunjp007 :
  7. media.mrp24@gmail.com : এস এইচ এম মামুন : এস এইচ এম মামুন
  8. rakib.jnu.s6@gmail.com : Rakibul Islam : Rakibul Islam
  9. mdraselali95@gmail.com : Rasel Ali : Rasel Ali
  10. rockyrisul@gmail.com : Rocky Risul : Rocky Risul
  11. rouf4711@gmail.com : আব্দুর রউফ : আব্দুর রউফ
  12. sohan.acct@gmail.com : Sohanur Rahman : Sohanur Rahman
হঠাৎ অসুস্থতায় জরুরি চিকিৎসাঃ এক - ডটস | দ্বিপ্রহর ডট কম
সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:০৩ পূর্বাহ্ন

হঠাৎ অসুস্থতায় জরুরি চিকিৎসাঃ এক – ডটস

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট টাইম: শুক্রবার, ১৩ মে, ২০২২
  • ১৭৪ বার পঠিত

বাংলা ভাষায় যাকে বলে ‘যক্ষা’, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় তাকে বলে ‘টিউবারকুলোসিস’ সংক্ষেপে ‘টিবি’। সাম্প্রতিক একটি গবেষণা সমীক্ষায় বলা হয়েছে যদি প্রতিরোধক টিকা এবং প্রতিশেধক ঔষধ আবিষ্কার না হতো তবে পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ মারা যেত যক্ষা রোগে। বর্তমানে পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশ মানুষই কোন না কোনভাবে যক্ষার জীবাণুতে আক্রান্ত, যদিও তা অনেক ক্ষেতেই প্রচ্ছন্ন।

বাংলাদেশে প্রতি একলক্ষ মানুষের মধ্যে গড়ে ২২৫ জন মানুষ প্রত্যক্ষভাবে যক্ষার জীবানুতে আক্রান্ত; ভৌগলিকভাবে যে স্থানগুলিতে সবচেয়ে কম মানুষ আক্রান্ত সেখানেও আক্রান্তের সর্বনিম্ন হার প্রতি লাখে ১১৭ জন। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্নের গড় হচ্ছে লাখে ২২৫ জন।

শরীরে নানান যায়গায় যক্ষা রোগ হতে পারে যদিও ফুসফুস, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদান্ত্র, যকৃত, হাড়, মাংসপেশী ইত্যাদি স্থানেই রোগটি সবচেয়ে বেশী হয়। তবে অন্যান্য স্থানের চেয়ে ফুসফুসে আক্রান্তের হারই সর্বোচ্চ। অনেকের ধারণা আছে শুধুমাত্র ফুসফুসেই যক্ষা রোগ হয়, সেটি খুবই ভ্রান্ত ধারণা।

এক সময়ে বলা হতো ‘যার হয় যক্ষা, তার নাই রক্ষা’, বর্তমানে এটির কোনই সত্যতা নাই। ঠিকমতো চিকিৎসা নিলে যক্ষা রোগটি সম্মপূর্ণ ভাল হয়। তবে সাবধান না থাকলে, একবার ভাল হবার পরে আবারও যক্ষা রোগ হতে পারে।

যক্ষা রোগের প্রতিরোধক হিসেবে জন্মের পরপরই বিসিজি (ব্যাসিলাস  কালমেৎ গের্যা) টিকা নিলে রোগটি না হবার সম্ভাবনা থাকে। বিসিজি টিকাটি ইপিআই (এক্সপান্ডেড প্রোগ্রাম অন ইমিউনাইজেশন) বা সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশের সকল শিশুকে দেওয়া হয়।  শিশুকালে একবার টিকাটি নিলে সারা জীবনে যক্ষা রোগ না হবার সম্ভাবনা শূন্য থেকে একশ ভাগ। ১৯২১ সালে যক্ষা রোগের প্রতিষেধক বিসিজি টিকা আবিষ্কার হবার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৩০০ কোটি মানুষকে টিকাটি দেওয়া হয়েছে। দুই ফরাসী বিজ্ঞানী আলবের কালমেৎ এবং কামিই গের্যা যক্ষা রোগের প্রতিরোধক টিকাটি আবিষ্কার করছিলেন। যক্ষা রোগের জীবাণু মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস নামক এক ধরণের ব্যাসিলাস। দুইজন বিজ্ঞানীর নামানুসারেই ভ্যক্সিনের নাম বিসিজি রাখা হয়েছে যার পুরো অর্থ ‘ব্যাসিলাস  কালমেৎ গের্যা’।

মানবদেহে বিসিজি ভ্যক্সিনের কাজ ‘টি হেল্পার-ওয়ান (টিএইচ-১)’ নামে এক জাতের কোষকে উদ্দীপিত করা। ওই উদ্দীপিত কোষ যক্ষার জীবাণুকে পর্যুদস্ত করতে বড় ভূমিকা নেয়। কিন্তু ইঁদুরের উপর পরীক্ষায় দেখা গেছে এই ভ্যক্সিনটি ‘টিএইচ-১’কে উদ্দীপিত করলেও ফুসফুসের আর এক গুরুত্বপূর্ণ কোষ ‘টি হেল্পার সেভেনটিন (টিএইচ-১৭)’ কে যক্ষা জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামাতে পারে না। ‘টিএইচ-১৭’ অথর্ব থাকে বলেই বিসিজি টিকা নেবার পরেও বহু মানুষের ফুসফুসে টিবি হতে পারে, তবে শরীরের অন্যন্য স্থানে টিবি হবার সম্ভাবনা প্রায় থাকেই না। বর্তমানে ভারতের দু’জন বিজ্ঞানী গোবর্ধন এবং দেবপ্রসাদ ‘টিএইচ-১৭’কে উদ্দীপিত করার বিষয়টি আবিষ্কার করেছেন। ফলে এখন থেকে যে বিসিজি টিকা দেওয়া হবে তা সম্পূর্ণভাবে টিবি প্রতিরোধে সক্ষম।

যক্ষাসহ অন্যান্য কয়েকটি প্রতিরোধযোগ্য রোগের হাত থেকে বাঁচার জন্য ইপিআই বা সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশের সকল শিশুকে সবগুলি টিকা দেওয়া অবশ্যই কর্তব্য। এ টপিকটির সাথে সম্পূর্ণ প্রাসঙ্গিক না হলেও যেহেতু সাংঘর্ষিক নয় সেহেতু ইপিআই সিডিউলের বিষয়েও একটু ধারণা দেওয়া যেতে পারে। ছক আকারে সংক্ষেপে তালিকাটি দেওয়া হলো।   

কোন বয়সে দিতে হয়  এন্টিজেনের নাম   ডোজ      শরীরের কোথায় দিতে হয়    

৬ সপ্তাহে          বিসিজি         ০.০৫ মিলি  ইঞ্জেকশনঃ বাম হাতের উপরের দিকে ত্বকের ভিতরে 

                ওপিভি-১       ২ ড্রপস    মুখে খাওয়ানো হয়   

                পেন্টাভ্যালেন্ট-১   ০.৫মিলি     ইঞ্জেকশনঃ ডান উঁরুর সামনে-পার্শ্ব বরাবর মাংশপেশিতে   

১০ সপ্তাহে          ওপিভি-২       ২ ড্রপস    মুখে খাওয়ানো হয়   

                পেন্টাভ্যালেন্ট-২   ০.৫ মিলি    ইঞ্জেকশনঃ ডান উঁরুর সামনে-পার্শ্ব বরাবর মাংশপেশিতে   

১৪ সপ্তাহে          ওপিভি-৩      ২ ড্রপস     মুখে খাওয়ানো হয়   

                পেন্টাভ্যালেন্ট-৩  ০.৫ মিলি    ইঞ্জেকশনঃ ডান উঁরুর সামনে-পার্শ্ব বরাবর মাংশপেশিতে   

৯ মাসে           এমআর        ০.৫ মিলি    ইঞ্জেকশনঃ ডান উঁরুর সামনে-পার্শ্ব বরাবর মাংশপেশিতে   

১৫ মাসে          এমআর        ০.৫ মিলি    ইঞ্জেকশনঃ ডান উঁরুর সামনে-পার্শ্ব বরাবর মাংশপেশিতে   

মনে রাখা দরকার যে, পেন্টাভ্যালেন্ট টিকাটি ৫টি রোগ প্রতিরোধের জন্য একত্রে তৈরী একটি সমন্বিত টিকা। এটি যে ৫টি রোগ প্রতিরোধের জন্য কাজ করে তা হলো- ১.ডিপথেরিয়া ২.হুপিংকাশি ৩.ধনুষ্টঙ্কার ৪.হেপাটাইটিস-বি এবং ৫.ইনফ্লুয়েঞ্জা।

ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকাকে ‘হিব’ বা ‘এইচআইবি HIB’ বলা হয় কারণ এটি হেমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জী-বি ভাইরাসকে প্রতিরোধ করে। এমআর টিকাটি ২টি রোগ প্রতিরোধের জন্য একত্রে তৈরী একটি সমন্বিত টিকা। এটি যে ২টি রোগ প্রতিরোধের জন্য কাজ করে তা হলো- ১.মিজেল্‌স বা হাম এবং ২.রুবেলা। ওপিভি হচ্ছে ওরাল পলিও ভ্যাকসিন যা পলিও রোগের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে ।

মোট টিউবারকিউলোসিস রোগীর শতকারা ১০ ভাগ রোগী, শিশু। আমাদের দেশে এই ১০ ভাগের মধ্যে মাত্র ৩ ভাগ রোগীকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে, বাকী ৭ ভাগ রোগীকে সনাক্তই করা যায়নি। বিষয়টি খুবই ভয়াবহ। সঠিক চিকিৎসা না নিলে ‘যার হয় যক্ষা, তার নাই রক্ষা’ প্রবাদটি সত্য হতে বাধ্য। যে বাড়িতে টিউবারকিউলোসিস রোগী আছে সে বাড়ীতে বা রোগীর সংস্পর্শে থাকে এমন শিশুদের টিউবারকিউলোসিস রোগ হবার সম্ভাবনা খুব বেশী। ফলে সন্দেহজনক সকল শিশুরই কফ পরীক্ষা করা উচিৎ। যদি দু’ সপ্তাহের বেশী কাশি এবং জ্বর থাকে তাহলে তার কফ অবশ্যই পরীক্ষা কারানো দরকার। যদিও বলা হয় যে, যক্ষা রোগীর সংস্পর্শে যারা থাকে তাদের ক্ষেত্রে একটু সন্দেহ হলেই কফ পরীক্ষা করানো জরুরি। এমনকি কোন সন্হে না হলেও কফ পরীক্ষা করানো দরকার।   

ডটস (DOTS – Direct Observation Treatment Services) হলো টিউবারকিউলোসিস রোগীদের চিকিৎসার জন্য একটি সহজ ও সুবিধাজনক ব্যবস্থাপনা। এটিকে ডট সার্ভিস (DOT Service)ও বলা হয়। ‘ডটস’ এর জন্য ‘ডটস সেন্টার’ আছে। সারা দেশে এর সংখ্যা ৮৮৫টি। সমস্ত সরকারী হাসপাতাল, সুর্যের হাসি ক্লিনিক, আরবান প্রাইমারী হেলথ কেয়ার সার্ভিস ডেলিভারী প্রজেক্ট (ইউপিএইচসিএসডিপি)তে ডটস সেন্টার আছে। প্রতিটি ডটস সেন্টারের  মাধ্যমে টিউবারকিউলোসিস রোগীদেরকে সরাসরি ঔষধ খাইয়ে দেওয়া হয়। যদি রোগী ডটস সেন্টারে না আসে তবে রেগীর জ্ঞাতসারে এবং তার সম্মতিতে তার কোন নিকটজনের কাছে ঔষধ দিয়ে দেওয়া হয়। সরাসরি রোগীকে ঔষধ দেওয়া হয় না, কারণ ঔধষ খাবার বিষয়টি তাতে নিশ্চিত হয় না। যদি দ্বিতীয় কোন ব্যক্তিকে ঔষধ দেওয়া হয় তবে তার দায়িত্ব হচ্ছে রোগীকে ঔষধটি খাইয়ে দেওয়া। সে যদি ভুলে যায় তরে রোগীর মনে থাকবে, আবার রোগী যদি ভুলে যায় তবে ব্যক্তিটির মনে থাকবে; এভাবে ঔষধ খাওয়ার বিষয়টিকে নিশ্চিত করানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়।

ডটস এ নিবন্ধিত কোন রোগী যদি স্থায়ী বা অস্থয়ীভাবে তার বাসস্থান ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যায় তবে বাংলাদেশের যে কোন ডটস সেন্টার থেকেই সে ঔষধ নিয়ে সেবন করতে পারে। স্থান পরিবর্তনের পূর্বে যদি কোন রোগী তার ডটস সেন্টারে সেটা জানায় তবে সে যেখানে যাচ্ছে তার নিকটস্থ ডটস কেন্দ্র সম্পর্কে তাকে তথ্য দিয়ে দেওয়া হয়।  

ডটস ব্যবস্থাপনা থাকার কারণে, যে কোন মানুষই তার সন্দেহজনক কফ পরীক্ষার জন্য যে খরচ করে, ডাক্তারের ভিজিটসহ তা ডটস সেন্টার থেকে নিয়ে নিতে পারে। কফ পরীক্ষার ফল পজিটিভ বা নেগেটিভ হোক তাতে কিছু এসে-যায় না। এক্ষেত্রে দরকার শুধু ডাক্তারকে দিয়ে তার প্রেসক্রিপশনের উপরে বা অন্য কোন কাগজে তার ভিজিটের পরিমান লিখে নেওয়া এবং ল্যাবরেটরী থেকে খরচের বিল নেওয়া। যে কোন লিখিত প্রমান থাকলেই ডটস সেন্টার থেকে খরচ দিয়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে প্রাইভেট প্রাকটিশনারগণকেও প্রশিক্ষণ দেওয়া আছে, তারা বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। নিজের বাসস্থান থেকে নিকটস্থ ডটস কেন্দ্রে যেতে আসতে যে খরচ হয় তাও দিয়ে দেওয়া হয়। শুধু তা-ই নয়, ব্যক্তিটি যদি শিশু বা মহিলা হয় তাহলে একজন এটেনডেন্ট এর যাতায়ত খরচও দিয়ে দেওয়া হয়।

বিদেশী সাহায্যে বাংলাদেশ সরকার ব্র্যাকের সহায়তায় ডটস কার্যক্রমের সকল ব্যয়ভার বহন করে চলেছে। গ্রামাঞ্চলে ব্র্যাক নিজে এবং শহরাঞ্চলে আরো কতগুলি বেসরকারী সংস্থার সাহায্যে ব্র্যাক ডটস কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন করছে। একটি ডটস সেন্টারে একজন রোগীর জন্য শুধুমাত্র ঔষধ বাবৎ খরচ হয় ৩২ হাজার টাকা। এছাড়া যাতায়ত ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার খরচতো আছেই। আরো আছে স্টাফ খরচ, ল্যাব খরচ, মেইনটেন্যান্স ও অন্যান্য খরচ। কোন রোগী যদি ঔষধ খেতে খেতে অনিয়মিত হয়ে যায় তবে তার এমডিআর (মাল্টি ড্রাগ রেজিসট্যান্ট) ডেভলপ করে, সেক্ষেত্রে খরচ হয় ৮২ হাজার টাকা। এর পরেও যদি অনিয়মিত হয়, তবে এক্সডিআর (এক্সট্রিম ড্রাগ রেজিসট্যান্ট) ডেভলপ করে, তখন খরচ হয় ১ লক্ষ টাকারও বেশী তবে সেখানে রোগীর বাঁচার আশা খুব একটা থাকে না, শুধু টাকাই খরচ হয়।

মানুষকে বাঁচানোর জন্যে, মানুষের ভোগান্তি কমানোর জন্যে, দেশকে যক্ষামুক্ত করার জন্যে বাংলাদেশ সরকারের এটি খুব বড় একটি উদ্যোগ। সরকার সাধ্যমতো এ বিষয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি ব্যক্তি পর্যায়েও এটির প্রচারণা খুবই জরুরি। ব্যক্তি যোগযোগের মাধ্যমে, বিভিন্ন সোসাল মিডিয়ার মাধ্যমে, ব্লগের মাধ্যমে এবং যার যতটুকু সুযোগ আছে তার মাধ্যমে বিষয়টির প্রচারণার গুরুত্ব অপরিসীম। একজন সচেতন মানুষ হিসেবে এ দায়িত্ব আপনারও।  

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দ্বিপ্রহর ডট কম-২০১৭-২০২০
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazardiprohor11