Site icon দ্বিপ্রহর ডট কম

হঠাৎ অসুস্থতায় জরুরি চিকিৎসাঃ পাঁচ – গলায় দড়ি (Hanging)

প্রচলিত অর্থে গলায় দড়ি বলতে মূলত গলায় দড়ি পেচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করাকে বোঝান হয়ে থাকে। এটি দুই ধরণের হয়-

১. আত্মহত্যামূলক  বা সুইসাইডাল : কেউ যদি নিজের ইচ্ছায় নিজেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে।

২. পরহত্যামূলক বা হোমিসাইডাল: যদি কেউ কাউকে অন্য কোন ভাবে মেরে তারপর গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালাতে চায়।

জরুরী  ভিত্তিতে করণীয়-

১. যদি গলায় দড়ি পেচিয়ে ফাঁস লাগানো ব্যক্তিকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়, তবে চিৎকার করে মানুষ জড় করতে হবে।

২. এক বা একাধিক ব্যক্তি ঝুলন্ত ব্যক্তির পা ধরে শরীরটিকে এমনভাবে উঁচু করে ধরবে যেন রশি ঢিলা হয়ে যায়, অন্যজন অতি দ্রুততার সাথে রশি কেটে সাবধানে রোগীকে নামাবে।

৩. রোগী ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি পুলিশকে খবর দিতে হবে।

৪. খুবই সতর্কতার সাথে কাঁধের কশেরুকার সুচালো  অংশ (সারভাইক্যাল স্পাইন) ও কাঁধের কশেরুকার (সারভাইক্যাল ভারটিব্রার) অবস্থান যতটা সম্ভব ঠিক-ঠাক করে শ্বাস নালীর পথ সুগম করতে হবে।

৫. যদি শ্বাসনালী পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে শ্বাসনালীতে কৃত্রিম ছিদ্রের ব্যাবস্থা করতে হবে। দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা না থাকলে প্রাথমিক চিকিৎসার সময়ে এটি না করাই ভাল।

৬. যদি কাঁধের কশেরুকা সরে গিয়ে থাকে তবে রোগীকে বড় চাদর বা কাপড়েরে উপরে চিৎ করে শুইয়ে কাপড়ের দু’দিকের প্রান্ত গিট মেরে, দু’জন দু’পাশে ধরে এমনভাবে বহন করতে হবে যাতে শরীরটি ধনুকেরমতো বাঁকা হয়ে থাকে। এতে কশেরুকায় চাপ লেগে স্পাইনাল কডের ক্ষতি হবার সম্ভাবনা কমে যায়।

৭.  রোগীকে যথা সম্ভব দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।

৮. স্বাক্ষীসহ পুরো ঘটনা দিন, তারিখ, সময় উল্লেখ করে লিখে রাখতে হবে। কারণ রোগী মারা গেলে পরবর্তীতে পুলিশি সহায়তার জন্য এসব কাজে লাগবে। পোষ্ট মর্টেম করে এটি আত্মহত্যামূলক নাকি পরহত্যামূলক সেটি বের করতে সাহায্য করবে।

৯. হৃতপিন্ডের ক্রিয়া সঠিকভাবে না চললে কার্ডিযাক ম্যসেজ দিতে হবে।

১০. প্রয়োজনে মুখ থেকে মুখে বা নাক থেকে মুখে কৃত্রিম শ্বাস-প্রস্বাস চালিয়ে যেতে হবে।

১১. গাড়িতে বা ভ্যানে করে রোগী বহন করতে হলে রোগীকে পুরো চিৎ করে না শুইয়ে একজনের পিঠের সাথে রোগীর পিঠ এবং আরেকজনের পায়ের উপরে রোগীর পা একটু উঁচু করে ধরে রোগীর শরীরটা অনেকটা ধনুকেরমতো বাঁকা করে রেখে চলতে হবে। 

(যুক্তিযুক্তের লিখিত এবং অন্বেষা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত ‘হঠাৎ অসুস্থতায় জরুরি চিকিৎসা’ গ্রন্থ থেকে সঙ্কলিত)  

Exit mobile version