যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে জাপানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।
গত মঙ্গলবার ১৫ আগস্ট দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে জাপানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিসহ দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা – কর্মচারীরা এতে অংশগ্রহণ করে।
দিনটি ছিল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, বাঙালীর মুক্তি সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী।
সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্যে দিয়ে শোক দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সঙ্গে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ। এসময় বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সকল শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ। পরে আগত অতিথি, জাপান প্রবাসী বাংলাদেশী এবং জাপান আওয়ামি লীগ এবং এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।
বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার এবং ১৯৭৫-এর সকল শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এছাড়া, অনুষ্ঠানে দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র -প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।
রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ তাঁর বক্তব্যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে বলেন, তিনি ছিলেন বাঙালী জাতির মুক্তির স্বপ্নদ্রষ্টা ও স্বাধীনতার রুপকার। এ অবিসংবাদিত মহাপুরুষের দূরদর্শী, অকুতোভয় ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সমগ্র বাঙ্গালী জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলো মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে ও মুক্তিযুদ্ধে। তাঁর নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি স্বাধীন দেশ এবং বিশ্বের দরবারে স্বাধীন বাঙালী জাতির মর্যাদা। বাংলাদেশী হিসেবে আজ আমাদের যে গর্বিত অস্তিত্ব ও বিশ্ব পরিমন্ডলে আমাদের উজ্জ্বল পরিচিতি- এ মহান নেতার অবদানের ফসল।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই দূরদর্শী পররাষ্ট্র নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রধান প্রধান আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের সদস্যপদ এবং জাপানসহ বিশ্বের শতাধিক দেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২-এ টোকিও দূতাবাস প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯৭৩ সালে জাপানে সরকারী সফর করেন, যার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বের সূচনা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে, তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।
গত ২৫ থেকে ২৮শে এপ্রিল ২০২৩ সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল জাপান সফরের ফলে দু’দেশেরে মধ্যকার দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক “কৌশলগত অংশীদারিত্ব পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন বলেন, আজ বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তাঁর স্বপ্ন, আদর্শ ও নির্দেশনা আজও আমাদের সঠিক পথ দেখায়। আর তাঁর দেখানো পথ ধরেই তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির পথে এগিয়ে চলেছে। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ‘‘রুপকল্প-২০৪১’’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি মেধাভিত্তিক, আধুনিক, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ তথা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের “সোনার বাংলা” হিসেবে গড়ে তোলার দৃঢ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
আলোচনা পর্বে প্রবাসী নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন পেশাজীবিরা জাতীয় শোক দিবসের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করেন এবং এই শোককে শক্তিতে রুপান্তর করে আরো উদ্যম ও দেশপ্রেম নিয়ে দেশের উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশকে আরও অধিকতর উন্নত করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের “সোনার বাংলা” হিসেবে গড়ে তোলার দৃঢ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রাম আর জীবন-কর্ম নিয়ে ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি