কুকুরে কামড়ালে জরুরি ভিত্তিতে করণীয়ঃ১. আক্রান্ত ব্যক্তির ভীতি দূর করতে হবে।২. কুকুর যাতে পর পর অনেককে কামড়াতে না পারে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।৩. ভাল করে ক্ষতস্থান সাবান ও প্রচুর
বিস্তারিত...
প্রচলিত অর্থে গলায় দড়ি বলতে মূলত গলায় দড়ি পেচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করাকে বোঝান হয়ে থাকে। এটি দুই ধরণের হয়- ১. আত্মহত্যামূলক বা সুইসাইডাল : কেউ যদি নিজের ইচ্ছায় নিজেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। ২. পরহত্যামূলক বা হোমিসাইডাল: যদি কেউ কাউকে অন্য কোন ভাবে মেরে তারপর গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালাতে চায়। জরুরী ভিত্তিতে করণীয়- ১. যদি গলায় দড়ি পেচিয়ে ফাঁস লাগানো ব্যক্তিকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়, তবে চিৎকার করে মানুষ জড় করতে হবে। ২. এক বা
বিষাক্ত কোন কঠিন, তরল বা বায়বীয় বস্তু শরীরের সংস্পর্শে আসলে, খেয়ে ফেললে বা পান করলে তা শরীরের ক্ষতি করতে পারে, মানুষ অসুস্থ্য হয়ে পড়তে পারে এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
সাপে কামড়ালে জরুরী ভিত্তিতে করণীয় ও জ্ঞাতব্য- ১. অভয় দিয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির ভীতি দূর করতে হবে। ২. সাপ যাতে পর পর অনেককে কামড়াতে না পারে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ৩. ভাল করে ক্ষতস্থান সাবান ও পানি দিয়ে ধুতে হবে। ৪. কোন ভাঙ্গা দাঁত বা অন্য কোন অংশ ভিতরে আছে কি না পরীক্ষা করে দেখতে হবে। ৫. নিরাপদ দূরত্বে থেকে যদি সম্ভব হয়, তবে পরবর্তীতে বর্ণনা করা যায় এমনভাবে সাপকে পর্যবেক্ষণ করা। কারণ, সব সাপ বিষাক্ত হয় না। সাপের বর্ণনা শুনে সেটা বিষাক্ত সাপ কি না তা সনাক্ত করা সম্ভব হতে পারে। ৬. ক্ষতস্থানের আশেপাশে রিং থাকলে তা খুলে ফেলা। এটি কোন সংস্কারের জন্য নয়, কারণ পরে ক্ষতস্থান ফুলে গিয়ে রক্ত চলাচলে অসুবিধা হতে পারে এবং খুলতে জটিলতা হতে পারে সেটা ভেবেই খুলে রাখা।
পানিতে ডুবে দুর্ঘটনার স্বীকার হবার সংখ্যা আমাদের দেশে কম নয়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে যখন চারিদিকের ডোবা, নালা সব পানিতে ভরে যায় সে সময় এর প্রাদুর্ভাবও বেড়ে যায়। শহরে বসবাসকারী আনেক ছেলে-মেয়ে এমনকি বড় মানুষও আছেন যারা সাঁতার জানেন না। এ ধরণের সাঁতার না জানা মানুষেরা সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে গেলে শখের বসে অনেক সময় সাগরে নামে এবং কখনও কখনও দুর্ঘটনার স্বীকার হয়। শহরে বসবাসকারী মানুষেরা ঈদ, পূজা, অন্য কোন পার্বণে বা যে কোন কারণে পরিবার-পরিজনসহ গ্রামের বাড়ীতে বেড়াতে গেলে তাদের সাতার না জানা বাচ্চাদের মধ্যে এ ধরণের দুর্ঘটনা বেশী ঘটে। এর কারণ ছোট বাচ্চাদের জলাশয়ের প্রতি এক ধরণের আশক্তি থাকে। আর এ আশক্তির কারণে তারা বার বার জলাশয়ের দিকে যেতে চায়। যতক্ষণ তারা বড়দের চোখে চোখে থাকে ততক্ষণ তাদের সে সুযোগ হয়ে ওঠে না। যখনই তারা চোখের আড়াল হয় তখনই জলাশয়ের কাছে যায় এবং দুর্ঘটনার স্বীকার হয়। পরিবারের বড়রা যখন সবার সাথে গল্প-গুজবে মেতে থাকে তখনই এ ধরণের দুর্ঘটনা বেশী ঘটে। এছাড়া নৌকাডুবি, লঞ্চডুবি বা অন্যান্য দুর্ঘটনাতো আছেই। পানিতে ডুবে দুর্ঘটনার স্বীকার হওয়ার ঘটনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, অনেক ক্ষেত্রেই সম্পূর্ণ ডুবে যাবার পূর্বেই মৃত্যু হবার মতো ঘটনা নেহায়েত কম নয়। এর অনেকগুলো কারণের মধ্যে ভয় পেয়ে মৃত্যু হওয়া একটি। সাঁতার না জানা থাকলে এ ধরণের ভয়ও বেশী থাকে। যারা সাঁতার জানে না তাদেরকে নিয়ে নৌকা ভ্রমনে গেলে এর প্রমান পাওয়া যায়। অতিসাবধানতার কারণে এরা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফ্যালে। নৌকা না ডোবানোর চেষ্টা করতে গিয়ে তা ডুবিয়ে ফ্যালে, ভয় ও অদক্ষতার কারণে। কোন কারণে পানিতে ডুবে গেলে যদি ফুসফুসের মধ্যে পানি ঢুকে ফুসফুস ভরে যায় বা অন্য কোন ভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্দ হয়ে যায় তাহলে অক্সিজেন এর অভাবে মানুষের মৃত্যু হতে পারে। এ ধরণের মৃত্যুকে ডুবে মরা বা ড্রাউনিং বলে। পানিতে ডোবার ধরণঃ ১. সিক্ত ডোবা (Wet Drowning): পানিতে ডুবে যাওয়ার ফলে যদি ফুসফুসে পানি প্রবেশ করে, তবে ফুসফুসের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বায়ু কোষগুলি পানি শোষণ করে তা স্ফিত হয় এবং এ শোষণের ফলে বাইরের পানি শরীরে ঢুকে তা রক্তের সাথে মিশে যায়। এ কারণে শরীরে রক্তের পরিমান অনেক বেড়ে যায় ও রক্ত তার স্বাভাবিক ঘনত্ব হারায়। ফুসফুসে পানি থাকার কারণে ও ফুসফুসের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বায়ু কুঠুরী স্ফীত হবার কারণে বাতাস ফুসফুসে প্রবেশ করতে পারে না বা প্রবেশ করলেও তা সঠিকভাবে শরীরে অক্সিজেন বিনিময় করতে পারে না যা বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজণীয়। ফলে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা যায়। রক্তের ঘনত্ব কমে যাবার কারণে সোডিয়াম, পটাসিয়াম ইত্যাদি ইলেক্ট্রলাইটের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয় এবং এ সমস্ত কারণে ডুবে যাওয়া ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে। ২. শুষ্ক ডোবা (Dry Drowning): এ ধরণের মৃত্যুতে পানি ফুসফুসে প্রবেশ করে না, হঠাৎ করে কিছু পানি নাক বা মুখের ভিতর দিয়ে শ্বাস নালীর উপরের দিকে প্রবেশের ফলে শ্বাস নালীর উপরের দিকটায় প্রচন্ড রকম সংকোচন হয়, ভীষণ কাশি হয় ফলে ফুসফুসে বাতাস প্রবেশ করতে না পারার কারণে মৃত্যু ঘটে। এ ধরণের ঘটনা ঘটার জন্যে খুব বেশী পানি থাকার দরকার হয় না, অল্প পানিতেই এমন ঘটনা ঘটে যেতে পারে, দু-এক ফোটা পানিও এর জন্যে যথেষ্ট হতে পারে। ৩. সেকেন্ডারী ডোবা (Secondary Drowning): পানিতে ডোবার পরে উদ্ধারের আধ ঘন্টা থেকে কয়েক দিনের মধ্যে মৃত্যু ঘটে। ফুসফুসের মধ্যে পানি জমা, ইলেক্ট্রলাইটের ভারসাম্যহীনতা, ইনফেকসন ইত্যাদি কারণে এ ধরণের মৃত্যু ঘটে। ৪. ডুবন্ত সিনড্রম (Drowning Syndrome): ভেগাস স্নায়ু নামে আমাদের শরীরে একটি স্নায়ু আছে যা শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্নায়ু সরবরাহ করে। এই ভেগাস স্নায়ুই আমাদের হৃতপিন্ডে স্নায়ু সরবরাহ করে এবং অনুভুতি তৈরী করে। বিভিন্ন কারণে এই ভেগাস স্নায়ু বন্দ হয়ে যাবার ফলে হৃতপিন্ডের কার্যক্রম থেমে যায় এবং মৃত্যু ঘটে। মানুষ পানিতে ডুবে গেলে ৪টি কারণে ভেগাস স্নায়ু বন্দ হয়ে যেতে পারে যথা- ক. পানিতে ডুবে যাবার কারণে প্রচন্ড ঠান্ডায় শরীরের বাইরের দিকের স্নায়ুমুখের অনুভূতি নষ্ট হয়ে যায় ফলে শরীরের বাইরের দিকের অনুভূতি শরীরের ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না। এ কারণে শরীর সুস্থ্য থাকার জন্যে যথাযথ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যার্থ হয় এবং মৃত্যু ঘটে। খ. উপর থেকে যদি পানিতে পড়ে যায় তবে পানিতে পড়ার মুহুর্তে উপরের পেটে, বুকে প্রচন্ড বেগে পানির ধাক্কা লেগে ভেগাস স্নায়ু বন্দ হয়ে যেতে পারে। গ. কান ও নাকের মধ্যে পানি ঢুকে যাওয়ার কারণে ভেগাস স্নায়ু বন্দ হয়ে হৃতপিন্ডের কার্যক্রম থেমে যেতে পারে। ঘ. প্রচন্ড ভয়ে স্নায়ু বিকল হয়ে গিয়ে ভেগাস স্নায়ু বন্দ হয়ে হৃতপিন্ডের কার্যক্রম থেমে যেতে পারে। পানিতে ডোবার পর কতক্ষণে মৃত্যু হতে পারেঃ ১. তাৎক্ষণিক মৃত্যু: যদি কার্ডিয়াক এ্যারেষ্ট হয় বা হৃতপিন্ডের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ২. দ্রুত মৃত্যু: যদি পুরোপুরি ডুবে মারা যায় তাহলে সাধু পানিতে ৪ থেকে ৫ মিনিটের মধ্যে এবং লোনা পানিতে ৮ থেকে ১২ মিনিটের মধ্যে। ৩. দেরীতে মৃত্যু: ডুবে যাবার থেকে উদ্ধারের পর ইনফেকসন হয়ে মৃত্যু। আধ ঘন্টা থেকে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে। ব্যবস্থাপনাঃ