আকাশ থেকে ঐ দূর পাড়াড়ের চূঁড়ায় নেমে আসে এক অশরীরি! মাথায় তার আলোকিত অরা! গায়ে শুভ্রতা! দূর থেকে ডাকছে,
নিঘুম এই ভয়ার্ত গভীর রাতে, অপ্রত্যাশিত ডাকে – তানসির ভয়ের মাত্রাটা আরো বেড়ে যায়! এখন আর একাকিত্ত্বের শোক নেই! প্রতিটি লোম দাঁড়িয়ে আছে! গায়ে চিমটি কেটে তানসি চেতন পরীক্ষা করে!
দোতলায় তানসির শোবার ঘর থেকে স্বর্ণদ্বীপের পুরো দিগন্ত দেখা যায়! ঠিক পাহাড়ের প্রান্তসীমা পর্যন্ত! তাদের বাড়ির পর মাঝে কোন ঘরবাড়ি নেই! শুধু ফসলের মাঠ!
জোসনা রাত! সুনশান নীরবতা। জোসনা রাতে আকাশে পাখী উড়ে কিনা, দেখতে গিয়ে – তানসির এই মহাবিপদ! ইচ্ছা থাকার পরেও দরজা বন্ধ করতে পরছে না! অশরীরি যদি পিছন থেকে আসে, ক্ষ্যাঁপে আক্রমন করে। হাত-পা কাঁপতে থাকলেও, সাহসীর ভাব নিয়ে, তানসি সবকিছু দেখেও না দেখার, শোনেও না শোনার ভান করে, দাঁড়িয়ে থাকে! তানসি শুনেছে,
বিজ্ঞান পড়ুয়া, তানসির ভূতে বিশ্বাস নেই, তারপরও চারদিকের আলো পরীক্ষা করে! আলোর অনেক কমতি! মেঘ গুলো বারবার চাঁদমূখ ঢেকে দিচ্ছে! জোসনা যেন একবার নিভে, আরেকবার জ্বলে!
দেখে সত্যিই আলোক দেহটি আস্তে আস্তে, অদ্ভুদ শব্দ করতে করতে কাছে আসছে! জানলার পাশে, ফুল গাছের কাছে আসতেই তানসি আর কিছুই দেখতে পায় না! ভয়ে চোখ-মুখ চরক গাছে! ভয় আর ধূয়া চারদিক যেন গ্রাস করে ফেলেছে! হঠাৎ লাফ দিয়ে অশরীরি আলোকদেহটি তানসির শরীরের ভিতর ঢুকে পড়ে। ভয়ে তানসি জ্ঞান হারিযে ফেলে! ক্লান্তদেহে ঘুমিয়ে পড়ে মেঝেতেই! স্বপ্নে দেখে এক শুদ্ধপুরুষ বলছে,
উষার আলো চোখে পড়ে তানসির ঘুম ভাঙ্গলো। অপূর্ব এক নতুন অনুভূতিতে জানালার পাশে দাঁড়াতেই দেখে, গাছে অপূর্ব সাকুরার সমারোহ। হৃদয়ে কোন ভয় নেই! চারদিক যেন স্বর্গ! শুদ্ধতা! জীবনটা যেমন দরকার ছিল – ঠিক তেমনই হয়ে গেছে! নীরবতার ভাষায় সম্মতি দিতেই আনন্দে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে! ভালোবাসা আর মিলনে পুরো সত্ত্বা আবেশিত হয়ে যায়! হৃদয়ে বেজে উঠে পূর্ণতার গান!
গল্প ও ভাবনা শাজাহান সিরাজ
পরিচালক, মাচিজো মাল্টিমিডিয়া