1. mdabirhossain.6894@gmail.com : Abir Hossain : Abir Hossain
  2. info@diprohor.com : admin :
  3. bappi.kusht@gmail.com : Bappi Hossain : Bappi Hossain
  4. biplob.ice@gmail.com : Md Biplob Hossain : Md Biplob Hossain
  5. mahedi988.bd@gmail.com : Mahedi Hasan : Mahedi Hasan
  6. mamunjp007@gmail.com : mamunjp007 :
  7. media.mrp24@gmail.com : এস এইচ এম মামুন : এস এইচ এম মামুন
  8. rakib.jnu.s6@gmail.com : Rakibul Islam : Rakibul Islam
  9. mdraselali95@gmail.com : Rasel Ali : Rasel Ali
  10. rockyrisul@gmail.com : Rocky Risul : Rocky Risul
  11. rouf4711@gmail.com : আব্দুর রউফ : আব্দুর রউফ
  12. sohan.acct@gmail.com : Sohanur Rahman : Sohanur Rahman
স্বপ্ন দেখতে শেখায় ‘স্বপ্নধরা’ | দ্বিপ্রহর ডট কম
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১৮ পূর্বাহ্ন

স্বপ্ন দেখতে শেখায় ‘স্বপ্নধরা’

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট টাইম: শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৯
  • ৭৫৩ বার পঠিত
পড়ার ফাঁকে মেডিটেশন করছে সোহাগ স্বপ্নধরা পাঠশালার শিক্ষার্থীরা। দুয়ারীপাড়া, পল্লবী, ঢাকা, ২৪ জুলাই। ছবি: আবদুস সালাম

ছোট্ট ফটক দিয়ে স্কুলটিতে ঢুকতেই ডান পাশে চোখে পড়ে একটি শ্রেণিকক্ষ। দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সেখানে মেঝেতে বসে চোখ বন্ধ করে মেডিটেশন করছে। শিক্ষক তাদের বলছিলেন পাঁচটি ভালো কাজের কথা ভাবতে। মেডিটেশন শেষে এক শিক্ষার্থী জানাল তার পাঁচটি ভালো চিন্তার কথা। এগুলো হলো খাওয়ার আগে হাত ধোয়া, শৌচাগার থেকে বের হয়ে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, বড়দের সম্মান করা, শিক্ষকের কথা মেনে চলা এবং পড়ার সময় পড়া।

এভাবেই শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলার চেষ্টা করছে রাজধানীর পল্লবীর ‘সোহাগ স্বপ্নধরা পাঠশালা’। এই পাঠশালার পড়াশোনার ধরন কিছুটা ভিন্নধর্মী। স্বল্প আয়ের মানুষের সন্তানদের কাছে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে এবং স্কুল থেকে এসব ছেলেমেয়ের ঝরে পড়া থামানোর উদ্দেশ্যে ২০০৬ সালে এই স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন সাগরিকা দাস মিত্র ও সাইফুজ্জামান সোহাগ। পল্লবীর দুয়ারীপাড়া বস্তিতে অবস্থিত স্কুলটি। শুরুতে একটি মেসের একটি কক্ষে মাত্র ১৩ জন শিক্ষার্থী ও একজন শিক্ষক নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল ‘স্বপ্নধরা পাঠশালা’। ২০০৮ সালে সোহাগের মৃত্যুর পর তাঁর স্মৃতিতে স্কুলের নতুন নামকরণ হয় সোহাগ স্বপ্নধরা পাঠশালা। বর্তমানে এই স্কুলে মোট ৫০০ শিক্ষার্থী ও ২১ জন শিক্ষক আছেন।

সোহাগ স্বপ্নধরা পাঠশালার শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা। দুয়ারীপাড়া, পল্লবী, ঢাকা, ২৪ জুলাই। ছবি: আবদুস সালাম

এই স্কুলে বসেই বুধবার কথা হলো স্কুলটির সহপ্রতিষ্ঠাতা সাগরিকা দাস মিত্রের সঙ্গে। তিনি জানান, প্লে গ্রুপ থেকে শুরু করে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় স্কুলটিতে। এখানে পড়তে যেকোনো শ্রেণির শিক্ষার্থীর বার্ষিক খরচ সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা। সাগরিকা বলেন, ‘আমরা অবৈতনিকই করতাম। কিন্তু পুরোপুরি ফ্রি হলে মানুষ মনে করে এখানকার পড়াশোনার মান বোধ হয় ভালো নয়, শিক্ষকেরা অবহেলা করবেন। আবার সামান্য ফি রাখায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদেরও মনে হয় যে তারাও স্কুলে কিছুটা অবদান রাখছেন।’

সাগরিকা জানান, প্লে গ্রুপ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মাসিক ফি ৫০ থেকে ৭০ টাকা। আর একই পরিবারের দুই সন্তান ভর্তি হলে একজনের ফি মওকুফ করে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে দেওয়া হয় স্কুলের পোশাক। এ ছাড়া সপ্তাহে একবার শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে টিফিন দেওয়া হয়। আছে শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থাও। যেসব শিক্ষার্থী স্কুলে শতভাগ উপস্থিত থাকে, তাদের বিনা মূল্যে দেওয়া হয় শিক্ষা উপকরণ।

স্কুলের আইসিটি ল্যাবে কাজ করছে শিক্ষার্থীরা। দুয়ারীপাড়া, পল্লবী, ঢাকা, ২৪ জুলাই। ছবি: আবদুস সালাম

কেবল পাঠ্যবইয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় এই স্কুলের কার্যক্রম। এখানে শিক্ষার্থীরা কারিগরি ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক শিক্ষাও পেয়ে থাকে। আছে ছোটখাটো কিছু কাজ করে আয়ের সুযোগও। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা এখান থেকে হস্তশিল্প তৈরির শিক্ষাও পেয়ে থাকেন। এসবের জন্য আলাদা কোনো ফির প্রয়োজন হয় না। স্কুলটির সহ-শিক্ষা কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে নাচ-গান, নাটক লেখা ও মঞ্চায়ন, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বইপড়া কর্মসূচি, চিত্রাঙ্কন, উচ্চারণচর্চা, স্বাস্থ্যবিষয়ক শিক্ষা, আরবি শিক্ষা, নৈতিক শিক্ষা ইত্যাদি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, স্বপ্নধরা পরীক্ষার ফলাফলনির্ভর শিক্ষা দেয় না। স্বপ্নধরা চায়, প্রান্তিক আয়ের পরিবারের ছেলেমেয়েরা যাতে স্কুল থেকে ঝরে না পড়ে। এ জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে শেখে। সাগরিকা বললেন, ‘আমরা প্রতিযোগী তৈরি করি না। এক শিক্ষার্থী আরেক শিক্ষার্থীকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

স্কুলের পাঠ শেষে বাক্স তৈরি করছে শিক্ষার্থীরা। এ থেকে আয়ও হয় তাদের। দুয়ারীপাড়া, পল্লবী, ঢাকা, ২৪ জুলাই। ছবি: আবদুস সালাম

স্কুলটি এখন ‘স্বপ্নধরা হিউম্যান ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’র অধীনে চলছে। সোসাইটির বর্তমান সভাপতি শওকত হোসেন। অন্যরকম, আগামী এডুকেশন ফাউন্ডেশন, হৃদয়ে বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তির আর্থিক সহযোগিতায় এগিয়ে যাচ্ছে স্কুলটি। সাগরিকা বলেন, ‘আমরা বিদেশি অনুদান পাই না, চাইও না। বিদেশিদের কাছে হাত পাততে আমার অনীহা আছে।’ সরকারের কাছ থেকেও তাঁরা কোনো সহযোগিতা বা অনুদান পান না। সাগরিকা আক্ষেপ করে বললেন, ‘স্কুলের মাসিক বাড়িভাড়া ২৬ হাজার টাকা। অন্যান্য বিল তো আছেই। প্রতি মাসে শিক্ষকদের বেতন হিসেবে দিতে হয় ১ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। মাঝে মাঝে এই বেতন ও বাড়িভাড়া দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।’

সেলাইয়ের কাজ শিখছে শিক্ষার্থীরা। দুয়ারীপাড়া, পল্লবী, ঢাকা, ২৪ জুলাই। ছবি: আবদুস সালাম

এ বছর এই স্কুলের দুজন শিক্ষার্থী প্রথমবারের মতো স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে ভর্তি হয়েছে। কথা হলো তাদেরই একজন শিল্পী আক্তারের সঙ্গে। শিল্পী এই স্কুলের শুরুর সেই ১৩ শিক্ষার্থীর একজন। সে এখন দুয়ারীপাড়া সরকারি মহাবিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ছে। স্কুলে থাকতে বিজ্ঞানকে ভয় পেত শিল্পী। তার কথায়, ‘স্কুলের শিক্ষকদের উৎসাহ ও সহযোগিতায় আমি বিজ্ঞানের ভয়কে জয় করতে পেরেছি।’ তবে এখানেই থেমে যেতে চায় না শিল্পী। তার স্বপ্ন এখন আরও বড়। চিকিৎসক হতে চায় শিল্পী।সেলাইয়ের কাজ শিখছে শিক্ষার্থীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দ্বিপ্রহর ডট কম-২০১৭-২০২০
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazardiprohor11