1. mdabirhossain.6894@gmail.com : Abir Hossain : Abir Hossain
  2. info@diprohor.com : admin :
  3. bappi.kusht@gmail.com : Bappi Hossain : Bappi Hossain
  4. biplob.ice@gmail.com : Md Biplob Hossain : Md Biplob Hossain
  5. mahedi988.bd@gmail.com : Mahedi Hasan : Mahedi Hasan
  6. mamunjp007@gmail.com : mamunjp007 :
  7. media.mrp24@gmail.com : এস এইচ এম মামুন : এস এইচ এম মামুন
  8. rakib.jnu.s6@gmail.com : Rakibul Islam : Rakibul Islam
  9. mdraselali95@gmail.com : Rasel Ali : Rasel Ali
  10. rockyrisul@gmail.com : Rocky Risul : Rocky Risul
  11. rouf4711@gmail.com : আব্দুর রউফ : আব্দুর রউফ
  12. sohan.acct@gmail.com : Sohanur Rahman : Sohanur Rahman
নুহাশ পল্লীতে একদিন (পর্ব-১৪): পি. আর. প্ল্যাসিড | দ্বিপ্রহর ডট কম
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৬ অপরাহ্ন

নুহাশ পল্লীতে একদিন (পর্ব-১৪): পি. আর. প্ল্যাসিড

পি. আর. প্ল্যাসিড
  • আপডেট টাইম: রবিবার, ২২ মার্চ, ২০২০
  • ৫৫১ বার পঠিত

ইমরানদের বিদায়ের সময়টা একটু রস বিহীন ছিল। যে জন্য ওরা দু’বন্ধু সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসার সময় কেউ কারো সাথে কোন কথা বলে নি। নীচে নেমে এসে ইমরান বলল, – একটা উবার ডাকি। বাসে আর চড়তে ইচ্ছে করছে না। ইমরানের কথায় মার্টিন বলে, আজ থেকে গেলে পারতে। আমি না হয় চলে যেতাম।


সামনে খালি মাঠের মত জায়গায় আগের ছেলে গুলোর কেউ নেই। এখন যারা আছে ওদের বয়স অনেক কম। দেখেই বোঝা যায় ওরা যে নতুন ব্যাজ। ওদের মধ্যে চেচামেচি হৈ চৈ অন্য রকম। সবার মুখে পবিত্র হাসি ফুটে আছে। ইমরান এবার বলে, – আমাদের ঢাকা শহর যে ভাবে পরিকল্পনা বিহীন ভাবে গড়ে উঠেছে, এখানে প্রতি ওয়ার্ডেও যদি বড় একটা পার্ক এবং খেলার মাঠ থাকতো তাহলে ছেলেরা খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পারতো। কোন রিক্রিয়েশনের ব্যবস্থা না থাকাতেই নেশার দিকে ঝুকছে বেশী। এদের ভবিষ্যৎ যে কি হবে?
ইমরান এমন ভাবে কথা বলে যেন সে অনেক বয়স্ক। মার্টিন বলল, তুমি কি অনেক কিছু করে ফেলেছ নাকী?আমি নিজেও ওদের মতই হয়ে যেতাম। আমার বাবা বাইরে থাকে বলে, প্রতিদিন আমাকে ফোন করে বাইরের লোকদের আচার আচরণ সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা করে। সই দেশের ছেলে মেয়েরা কিভাবে বড় হচ্ছে সবই বলে। আমার মধ্যে ওসবই কাজ করে যে কারণে আমি বিদেশ না গেলেও বাবার মুখে প্রতিদিন শুনতে শুনতে কেমন যেন বাইরের মতই চিন্তা চেতনা নিয়ে ভাবী। এই জন্যই আমি আংকেলের কথায় দৌড়ে এলাম।

আমার তো মনে হয় তোর নুহাশ পল্লী যাবার পর থেকে চিন্তা চেতনায় নতুন কিছু ঘটবে। তখন কিসের বিদেশ কিসের সচেতনতা। তবে তোর আন্টিকে দেখে মনে হয়েছে অনেক ভাল মহিলা সে। আমার কাছে খুব ভাল লেগেছে। আন্টির কথা শুনে মনে হয়েছে তোর আংকেলের থেকে পড়ালেখা বেশী করেছে।

যতটা জানি, তাদের এস এস সি পরীক্ষার পরপরই বিয়ে হয়ে গেছে। এরপর আন্টি নিজের চেষ্টায় পড়াশোনা করেছেন। তাদের পরিবারে মানে আংকেলদের পরিবারে অন্য কেউ বেশী পড়াশোনা করেনি তাই আন্টিকেও পড়াশোনায় বাধা দিয়েছিল। পরে জ্বিদ করে আন্টি এম বি এ পর্যন্ত মনে হয় কমপ্লিট করেছেন। এজন্যই ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা করাতে আগ্রহী।

আন্টির কথায়ই মনে হয় উনি যে পড়াশোনা করা।
একবার পিছন ফিরে বিল্ডিং গুলির দিকে তাকিয়ে আবার গেইটের দিকে হাটে। রাস্তায় ইট বিছানো। হাটতে পায়ের তলায় উচু নিচু বোঝা যায়। হাটতে গিয়ে একটু আধটু বেকে যায় তারা। সামনে গেইটে গিয়ে দাঁড়োয়ানের দিকে তাকিয়ে ইমরান হাসি দিয়ে বলে, – আসি ভাই। ধন্যবাদ। বলে গেইট থেকে বেরিয়ে যায়। বাইরে গিয়ে উবার ডাকার কথা ভুলে যায় তারা। একটার পর একটা অটো আসছে আর যাচ্ছে। তাদের আর হাত উচিয়ে অটো থামাতে হয় না। অটো চালকই তাদের দেখে ইশারা করে জানেত চায় যাবে কি না? ওরা কোন উত্তর না করাতে অটো চালকরা চলে যায়।


এটুকু সময়ে যত গুলো অটো তাদের সামনে দিয়ে গেল এ দেখে ইমরান বলে, -ওদের কাছ ধেকে নাকী প্রতিদিন দেড়শ করে টাকা নেয় স্থানীয় পাতি নেতারা। তাহলে দৈনিক ওদের কত টাকা ইনকাম হয় একবার ভেবে দেখেছ। ওরা যে ভোট বিহীনভাবে গায়ের জোড়ে নেতা হয়ে বসে আছে, ওদের তারাতে হবে। শ্লোগান তুলতে হবে, ”এখন আর চাঁদা তোলার নেতা নয়, ভোট করে নেতা হও”। ” নেতা তুমি যে দলেরই হও, জনগনকে কাজের শরীক করো”।


ইমরান একটা অটোকে দূর থেকে আসতে দেখে হাত উচিয়ে থামায়। সেটাতে আগে থেকেই একজন যাত্রী বসা ছিল। যাত্রীটি তাদের দেখে চেপে বসলে ইমরান আর মার্টিন উঠে বসে। এরপর অটো চলতে থাকে। একটু সামনে গিয়ে জ্যামে আটকে যায় তাদের অটো। সেখান থেকে পাঁচ মিনিট হাটলেই রেল গেইট। অটো সেখান পর্যন্তই যাবে। একবার ভাবে নেমে হেটে যাবে আবার ভাবে উঠেছি যেহেতু শেষ পর্যন্ত বসেই যাই। সহ যাত্রীর বয়স পঞ্চাশের ঘরে হবে। তাকে বসে থাকতে দেখে তারা আর নামে না। দশ মিনিট এক জায়গাতে দাঁড়িয়ে থাকায় চালক বলে, – ভাই এটুকু রাস্তা আপনারা চাইলে হেটেই যেতে পারেন।


যাবার সময় যেই অবস্থা ছিল এখন তার চেয়ে বেশী জ্যাম। এক লোক হাতে লাঠি নিয়ে অটো চালকদের ধমক দেয়। ধমক দিয়ে এক লাইনে গাড়ি চালোর নির্দেশ করছে। উল্টো দিক থেকে লাইন ভেঙ্গে অটো আর একটা প্রাইভেট জ্যাম লাগিয়ে বসে আছে। জ্যাম ছুটতে দেরী হবে মনে করে সামনের অটো থেকে যাত্রী নেমে হাটতে শুরু করে। ইমরান দেখে রাস্তায় ধুলো উড়ছে। ্একটু বাতাস এলে ধুলো সব চোখে মুখে এসে ঝাপটে লাগছে। এর মধ্যে হেটে যাওয়াদের অনেকে মুখে রুমাল দিয়ে বা হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে না পারতে যেন হাটছে।


ইমরান বসে বসে ভাবে, দেশের বর্তমান যে অবস্থা তার মধ্যে ঢাকা শহরে ধুলোবালির অবস্থা দেখে মনে হয় ঢাকা শহর মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে। কিন্তু কিছু করার নেই। এর মধ্যেই তাদের দেশে থাকতে হয়। তার বাবা যে দেশে এসেছিলেন তিনি ঘর থেকে বের হতে চাইতেন না রাস্তার এই জানজট আর ধুলোবালির কারণে। সামান্য একটু সময়ের জন্য যদি কোথাও বের হতেন তারাতারি করে ঘরে যেতে পারলে যেন বাচতেন। ঘরে গিয়েই তাড়াতাড়ি করে গোসলে ঢুকে ঝুপ ঝুপ করে গায়ে পানি ঢেলে গোসল করে বের হতেন।


বাইরে থেকে কেউ আসলে নিজেদের দেশের এই পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে পারে না। ভাবতে ভাবতে তাদের অটো চলতে শুরু করে। খুব ধীর গতিতে চলে অটো। একটু পরেই রেল গেইটের সামনে গিয়ে অটো থামিয়ে চালক নেমে যেতে বলে। এখানে গাড়ি ইউ টার্ণ করবে। সামনে এক ট্রাফিক পুলিশ এক হাতে বন্ধ করা ছাতা আরেক হাতে লাঠি। লাঠি ডান দিকে উচিয়ে অটো গুলোকে সামনে এগুতে নিষেধ করছে। অটো থেকে ইমরান নামতে নামতেই দেখে ট্রাফিক পুলিশ তার ছাতাটি পায়ে কালো বুট জুতার ভিতর ঢুকিয়ে পিছন দিকে ইশারা করছে। ইমরান তার ইশারা দেখেই বুঝতে পারে ওখানে এসে থামা অটোর কাছে টাকা চাইছে। ইমরান তার বন্ধু মার্টিনকে বলে, – দোস্ত, আমি ভাড়া দেই, তুমি বিষয়টি ভিডিও কর। দেখো শেষ পর্যন্ত পুলিশ কি করে।


বলেই ইমরান তার নিজের স্মার্ট ফোন অন করে মার্টিনের হাতে দিয়ে বলে, – সাবধানে ভিডিও করবে। চালক মনে হয় ওকে টাকা দিবে। সেই দৃশ্যটা যেন ক্লিয়ার আসে। ইমরান দুজনের মোট ভাড়া দেয় বিশ টাকা। সেখান থেকে দশটাকা ট্রাফিক পুলিশের হাতে দিয়ে চালক একা একাই বলে, – তিনজন যাত্রী এনে একজনের ভাড়া যদি তাদেরই দিয়ে দিতে হয় তাহলে গাড়ির ভাড়া দেই কোথেকে। পরিবার না খাইয়ে রাখতে হবে মনে হয় ওদের খুশী করতে গিয়ে।


চালকের এমন আক্ষেপ করা কথা শুনে ইমরান প্রশ্ন করে, – এই যে টাকা দিলেন এটা কি দিনে একবার নাকী যতবার এখানে ক্ষেপ নিয়ে আসেন ততবারই দিতে হয়?
চালক উত্তর দেয়, – যতবার আসি ততবারই দিতে হয়। প্রতিবার দশটাকা। দিনে এদেরই একশটাকার উপর দিয়ে দিতে হয়। তারপর স্ট্যান্ডে দিতে হয় আরোও দেড়শ’ টাকা।

আপনারা দেন কেন? না দিলেই তো পারেন।

না দিয়ে এখানে আমাদের গাড়ি চালানো কি সম্ভব মনে করেছেন?
কথা আর না বাড়িয়ে মার্টিনের হাত থেকে সে তার মোবাইল নিয়ে ভিডিও বাটন পুশ করে রেকর্ডিং করা অফ করে।
(চলবে) —–

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দ্বিপ্রহর ডট কম-২০১৭-২০২০
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazardiprohor11