1. mdabirhossain.6894@gmail.com : Abir Hossain : Abir Hossain
  2. info@diprohor.com : admin :
  3. bappi.kusht@gmail.com : Bappi Hossain : Bappi Hossain
  4. biplob.ice@gmail.com : Md Biplob Hossain : Md Biplob Hossain
  5. mahedi988.bd@gmail.com : Mahedi Hasan : Mahedi Hasan
  6. mamunjp007@gmail.com : mamunjp007 :
  7. media.mrp24@gmail.com : এস এইচ এম মামুন : এস এইচ এম মামুন
  8. rakib.jnu.s6@gmail.com : Rakibul Islam : Rakibul Islam
  9. mdraselali95@gmail.com : Rasel Ali : Rasel Ali
  10. rockyrisul@gmail.com : Rocky Risul : Rocky Risul
  11. rouf4711@gmail.com : আব্দুর রউফ : আব্দুর রউফ
  12. sohan.acct@gmail.com : Sohanur Rahman : Sohanur Rahman
নুহাশ পল্লীতে একদিন (পর্ব-৬): পি. আর. প্ল্যাসিড | দ্বিপ্রহর ডট কম
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৯ অপরাহ্ন

নুহাশ পল্লীতে একদিন (পর্ব-৬): পি. আর. প্ল্যাসিড

পি. আর. প্ল্যাসিড
  • আপডেট টাইম: শুক্রবার, ১৩ মার্চ, ২০২০
  • ৩৪১ বার পঠিত

নুহাশ পল্লীতে একদিন — (৬)

এয়ারপোর্ট পর্যন্ত গিয়ে ইমরান তার বন্ধুকে নিয়ে সেদিনের সেই চায়ের দোকানে যায়। দোকানে ঢুকে এদিক সেদিক তাকিয়ে দেখে সেদিনের ছেলেটিকে সে দোকানের কোথাও দেখছে না। দেখতে না পেয়ে দোকানদারকে ডেকে চায়ের অর্ডার দেয়। যে টেবিলে বসেছে সে টেবিলে আরো কয়েকজন বসা। তাদের সামনেই চা ওয়ালাকে চায়ের অর্ডার দিয়ে ডেকে প্রশ্ন করে, সেদিন আপনার এখানে এসে যে ছেলেটিকে দেখেছি ওকে যে আজ দেখছি না? কোথায় গেছে ও?স্কুলে গেছ। বিকাল থেকে আসবে।


ছেলেটির স্কুলে যাবার কথা শুনে খুশী হয় ইমরান। এমন ভাব করে যেন ছেলেটির খোঁজেই যেন সে এসেছে এখানে। লোকগুলো তাদের কথার মাঝে ইমরানকে উচ্চস্বরে কথা বলতে দেখে একটু বিরক্ত ভাব প্রকাশ করে। তাদের বিরক্ত হওয়াকে উপেক্ষা করে ইমরান প্রশ্ন করে, – সেদিন যে বলল ও স্কুলে যায় না।

আপনি বুঝতে ভুল করেছেন হয় তো। আমার এখানে বিকাল থেকে কাজ করে। মাঝে মধ্যে ছুটি থাকলে দেখা যায় সকাল থেকে এসে সাহায্য করছে।

আপনি কি ওর গার্ডিয়েন নাকী?


লোকটি কাপে গরম পানি ঢালতে ঢালতে ইমরানের দিকে মাথা উচু করে তাকিয়ে প্রশ্ন করেন, – আপনি কি কোন গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেন? মনে হয় কোন তথ্য নেবার জন্য আসেন এখানে।


ইমরান দোকানদারের কথায় কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে যায়। সাথে বসা লোক গুলো কিছুটা কাঁশি দিয়ে সতর্ক হয়ে বসে। দোকানদর আর ইমরানের কথা শোনার জন্য কান খাড়া করে। ইমরান সাহস করে বলে, – আসলে আমি ফার্মগেইট এলাকায় থাকি। মাঝে মধ্যে এই এয়ারপোর্ট এলাকায় আসা হয়। আমি শুনেছি এই এটুকু এলাকাতে আপনার ছিনতাই হয় বেশী। তারপর এয়ারপোর্ট এলাকার মত গুরুত্বপূর্ণ জায়গাতে লোকজনের যে অনিয়ম এসব দেখে আমার কাছে কেন যেন মনে হচ্ছে শহরে প্রবেশ পথটাকে সুন্দর পরিমার্জিত করতে পারলে বিদেশীরা আমাদের দেশে এসেই ভাল একটা ইমেজ নিয়ে দেশে থাকতে পারবে।

আপনার মাথায় এমন চিন্তা এল কেন? ইমরান চোখ বড় করে তাকায় দোকানদারের দিকে। মনে মনে ভাবে ভুল জায়গায় সে মুখ খোলেনি তো আবার? দোকানদার বলেন, – এই এটুকু এলাকা থেকে প্রতিদিন কতটাকা চাঁদা তোলা হয় আপনি জানেন? আর এই চাঁদার ভাগ যায় কোথায় সেটা খবর রাখেন না তো? এখানে আপনি চাইলেও কিছুই করতে পারবেন না। আপনি কি বলতে চাইছেন বুঝতে পারছি। বলে লোকটি ইমরানকে নিরুৎসাহিত করতে চায়। ইমরান প্রশ্ন করে, – আপনি যে এখানে এই চায়ের দোকান দিলেন এটাতো বৈধ জায়গায় না। কিভাবে দিলেন?


আপনি এই এয়ারপোর্ট থেকে হাজী ক্যাম্পের আশেপাশে খোঁজ নিয়ে দেখেন কম করে হলেও একহাজার দোকান আছে যা নেতাদের টাকা দিয়ে চালাতে হচ্ছে। সব গুলোই বাইরে, রাস্তার উপর। প্রতিদিন একেকটি দোকান থেকে দেড়শ থেকে দুইশ টাকা চাঁদা তুলে তারা, এর বেশীও আছে, কম নেই। তারপর একটু ভিতরে গিয়ে দেখেন রিক্সার কি জ্যাম। রাস্তা আটকে ওরা দাঁড়িয়ে আছে। দেখার আর বলার কেউ নেই। ওদের কাছ থেকে প্রতিদিন টাকা নিচ্ছে। আপনি কাকে কি বলবেন। এসব ঠিক করতে হলে প্রশাসনের আন্তরিকতা দরকার। আপনি এখানে কিছু করতে গেলে তারাই আপনাকে বাধা দিবে। না হলে যে তাদের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে।


একই টেবিলে বসা লোকগুলো এবার তাদের কথায় অংশ নেয়। একজন বলে, – ভাই জনগন এখন ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছে। এসবের বিরুদ্ধে কেউ একজন উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসলে দেখবেন পুরো এলাকার মানুষ ঝাপিয়ে পরবে। কিন্তু কথা হচ্ছে, বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাধবে কে?


আরেকজন বলল, – ভাই একটু ভিতরে গেলে দেখবেন রাস্তার উপর কাঁচা বাজার বসিয়েছে। সেখান দিয়ে পায়ে হেটেও মানুষ চলতে পারে না। প্রশাসনের কি চোখ নেই? আপনি এসব পরিষ্কার করার কাজ শুরু করেন, দেখবেন সাধারণ মানুষ আপনার সাথে আছে।


ইমরান তাদের সবার কথা শোনে। সাথে বসা তার বন্ধু ইমরানের এমন আলাপ শুনে অবাক হয়। সে ইমরানের সাথে আসলেও ইমরানের ভিতর এমন চিন্তা কাজ করছে তা বুঝতে পারে নি। আলোচনা শুনে প্রশ্ন করে, – দোস্ তুই তো দেখছি জলে থেকে কুমিড়ের সাথে লড়তে স্বপ্ন দেখছিস। যা ভাবছিস তা বুঝে শুনে ভাবছিস তো?


আমার কেন যেন মনে হয় আমি এই এলাকাতে কাজটি শুরু করলে দ্রুত মিডিয়ায় চলে আসবে। তখন শহরবাসীর সমর্থন পাওয়া সহজ হবে। এটা দেখে অনেকেই তখন তাদের নিজেদের এলাকায় একই ভাবে ফুটপাত পরিষ্কার করতে এগিয়ে আসবে।

কিন্তু তুমি এটা শুরু করলে তোমার বড় শত্রু হয়ে যাবে নেতারা। পারবে তুমি তাদের সাথে টিকতে?

ওরা নেতা কে বলেছে? নেতা হয় জনগনের ভোটে। জনগনকে সাথে নিয়ে। ওদের সাথে কিছু মাস্তান ধরনের লোক আর চাটুকার ছাড়া জনগন পাবে না। ওরা নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়নি। এজন্য ওদেরও মনে ভয় আছে। ওরা ভাল খুব ভাল করে জানে, সবসময় তাদের আজকের মত এই সুদিন থাকবে না।


ইমরানকে এমন কথা বলতে শুনে বলে, – আমাকে তুমি এখানে নিয়ে এসে এসব আলাপ করছো, আমি চলে যাই। এসবে আমাকে তুমি পাবে না।


সবার সামনে ইমরান তার বন্ধুর কথায় লজ্জা পেয়ে কথা ঘুরিয়ে বলে, আপনারা আমাকে সমর্থন দিলে দেখবেন আমি একাই এই এলাকাকে একটা সুন্দর পর্যায় নিয়ে আসবো। এই যে আপনারা বলছেন, দেখবেন আপনারা এগিয়ে আসলে আপনাদের পিছনে আরো লোক এসে সমর্থন দিবে। যত বড় ডনই থাকুক এই এলাকায়, জনগনের ন্যায্য দাবীর কাছে ওরা হারতে বাধ্য হবে। এক সাথে তো আর সব শুরু করা যাবে না, একটা একটা করে শুরু করতে হবে। আমি আজকে পুরো এলাকা ঘুরে দেখবো। আরপর চিন্তা করবো কোন দিক থেকে শুরু করা যায়। এজন্য উপরের কারো সাথে আলাপ করার দরকার নেই। আপনারাই মনে করি যথেষ্ট।


একজন তাদের মধ্য থেকে বলে, – ভাই আমার মটরসাইকেল আছে। আপনি চাইলে আপনাকে নিয়ে ঘুরে দেখাতে পারি।


লোকটির কথা শুনে ইমরান মনে অনেকটা সাহস পায়। এর মধ্যে চা আসে টেবিলে। চা খেতে খেতে তাদের মধ্যে আরো বেশী জানাশোনা হয়। একপর্যায় ইমরান উঠে আসার কথা ভাবে। উঠার আগে চায়ের দোকানদারকে বলে, নাহিদকে যেন বলে তার আসার কথা। পরে যখন আসবে তখন ওর সাথে দেখা করবে বলে দোকানের বাইরে যায়। যিনি তাকে মটর সাইকেলে নিয়ে এলাকা ঘুরে দেখানোর কথা বলেছিলেন তার নাম আর মোবাইল নাম্বার নিয়ে বলে, – আজ সময় না দিলেও পরে একদিন আসবে। শুক্রবারদিন আসলে এলাকায় ঘুরে দেখে জানা সহজ হতে পারে।


ইমরানের কথায় লোকটি বলে এই এলাকায় শুক্র, শনি বলে কোন কথা নেই। প্রতিদিনের চিত্র একই সমান। যে কোনদিন আসলে আগের দিন তাকে বললে পর হবে তার জন্য সুবিধা হবে।


ওদের থেকে দূরে গিয়ে ইমরান ফোন দেয় তার মিরাজ আংকেলকে। কয়েকবার রিং হবার পর ফোন রিসিভ করে মারীয়ার মা। ইমরান তার পরিচয় দিয়ে জানতে চায়, মিরাজ আংকেল বাসায় আছেন কিনা?


মারীয়ার মা বললেন, বাসায় মেহমান এসেছে। তাদের সাথে কথা বলছে তার আংকেল। জরুরী হলে দিবে না হলে পরে ফোন করতে বলেন। একটু ভেবে ইমরান বলে, – আংকেলকে বইলেন আমি এদিকে এসেছিলাম তাই ফোন করেছি। পরে একসময় আসবো আবার।


কাছাকাছি থাকলে মারীয়ার মা বাসায় যেতে বললেন । বাসায় যেতে বলেই বললেন, – মারীয়াকে দেখতে এসেছে। তাদের সাথে কথা বলায় ব্যস্ত তার আংকেল। বাসা চিনলে যেন সে বাসায় যায়।
বাসা সে চিনে না কিন্তু কি করে বলে সে বাবা চিনে না। ভাবে কি বলবে? বাসার ঠিকানা চাইবে না পরে আবার আসবে বলবে। বলতে বলতে বলে তুমি মারীয়ার সাথে কথা বল। ও তোমাকে ঠিকানা বললে চলে আস বাসায়। খেয়ে তারপর যেয়ো। বলে ফোন দেয় মারীয়ার হাতে।


ইমরান বেশ ভাল জানে মারীয়ার মা যে কত ভাল মেহমানদারী করতে জানেন। তাদের বাসায় কোন মেহমান গেলে না খাইয়ে ছাড়ে না। কিছু কিছু মেহমান নাকী তার বাসায় একবার গিয়ে সেবা যতœ পেয়ে পরে বারবার যেতে চায়। এটা তার বাবার কাছে শোনা গল্প। তাই ভাবে, আজ তাদের বাসায় গিয়ে সেটা বাস্তবে প্রমাণ করবে কি না।
(চলবে….)

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দ্বিপ্রহর ডট কম-২০১৭-২০২০
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazardiprohor11