1. mdabirhossain.6894@gmail.com : Abir Hossain : Abir Hossain
  2. info@diprohor.com : admin :
  3. bappi.kusht@gmail.com : Bappi Hossain : Bappi Hossain
  4. biplob.ice@gmail.com : Md Biplob Hossain : Md Biplob Hossain
  5. mahedi988.bd@gmail.com : Mahedi Hasan : Mahedi Hasan
  6. mamunjp007@gmail.com : mamunjp007 :
  7. media.mrp24@gmail.com : এস এইচ এম মামুন : এস এইচ এম মামুন
  8. rakib.jnu.s6@gmail.com : Rakibul Islam : Rakibul Islam
  9. mdraselali95@gmail.com : Rasel Ali : Rasel Ali
  10. rockyrisul@gmail.com : Rocky Risul : Rocky Risul
  11. rouf4711@gmail.com : আব্দুর রউফ : আব্দুর রউফ
  12. sohan.acct@gmail.com : Sohanur Rahman : Sohanur Rahman
নুহাশ পল্লীতে একদিন (পর্ব-১৮): পি. আর. প্ল্যাসিড | দ্বিপ্রহর ডট কম
শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ১১:৪৯ অপরাহ্ন

নুহাশ পল্লীতে একদিন (পর্ব-১৮): পি. আর. প্ল্যাসিড

পি. আর. প্ল্যাসিড
  • আপডেট টাইম: রবিবার, ২৯ মার্চ, ২০২০
  • ৪৭৪ বার পঠিত

দুজন পাশাপাশি বসলেও কেউ কারো সাথে কথা বলে না। বনানী বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত গিয়ে ইমরান মার্টিনের সাথে কথা বলবে মনে করে তার দিকে তাকিয়ে দেখে সে সিটের পিছনে হেলান দিয়ে বেশ আরাম করে ঘুমুচ্ছে। দেখে সে আর তাকে বিরক্ত করেনি। বাস মহাখালী ক্রস করার পর মার্টিনের ঘুম ভাংলে বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখে বাস পুরাতন এয়ারপোর্টের কাছ দিয়ে যাচ্ছে। দুই হাত এক সাথে করে মুখের উপর রাখে।


ইমরান বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখছিল। মার্টিনের সজাগ হওয়া টের পেয়ে সে বলে, – চলে এসেছে। বলেই কোন প্রসঙ্গ ছাড়াই বলে, – শোন আমি ভাবছি ডিপার্টমেন্টের পিকনিকে আমি যাবো না। একদিন চলো আমরা একটা হায়েজ গাড়ি ভাড়া করে সবাই মিলে যাই ঘুরতে। সেটা অনেক মজা হবে।


মার্টিনের চোখে মুখে তখনো ঘুম ঘুম ভাব। কোন উত্তর না দিয়ে চোখ ঘষতে শুরু করে। উপরে তেমন ভীড় না থাকায় ডানে বামে দুদিকে তাকালে বাইরের দৃশ্য দেখা যায়। মার্টিন ডান দিকে দেখার পর বাম দিকে তাকিয়ে বলে, – বিজয় স্মরণীর কাছে চলে এসেছি। আমি এখানেও নামতে পারি। এসেই তো পরেছি। চলো এক সাথেই সামনে নামি। ওখান থেকে তো তুমি হেটেই তোমার বাসায় যেতে পারবে। খেজুর বাগান থেকে তো তোমার বাসা প্রায় একই সমান দূরত্ব।


মার্টিন সামান্ন নড়ে বসে। কন্ডাক্টর এতক্ষণ পর উপরে এসে সবার টিকিট চেক করতে শুরু করলে, ইমরান তাকে অনুরোধ করে বলে, চক্ষু হাসপাতালের কোনায় নামিয়ে দিতে।
কন্ডাক্টর তাদের প্রস্তুত হতে বলে টিকিট দেখাতে বলেন। বাস বিজয় স্মরণীর ভিতর দিক দিয়ে পশ্চিম দিকে ছুটে চলে। সামনে যেতেই বিশাল বড় এক যুদ্ধ বিমানের প্রতিকৃতি রাস্তার উপর বানিয়ে রেখেছে। সেটার গায়ে লাল সবুজের পতাকা আঁকা। পতাকার দিকে তাকালে ধুলোয় তার রং বিকৃত হবার বিষয়টি খেয়াল করে ইমরান নিজেই মনে মনে ভাবে এত সুন্দর একটা জিনিষ করেছে রাস্তার সৌন্দর্য বাড়াতে অথচ এর যত্ন কেউ নেবার কথা মনে করে না। ভাবনার পাশাপাশি মনের অজান্তে মুখ খুলে বলে উঠে, – রাস্তার উপর এই যে যুদ্ধ বিমানটা বানিয়ে রেখেছে, কেউ এর যত্ন নেয় বলে মনে হয় না অথচ খোঁজ নিলে দেখা যাবে এর জন্য আলাদা বাজেট রয়েছে নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার। কেউ হয়তো টাকা তুলে খেয়েও ফেলছে।


মোড় ঘুরে বাস দক্ষিণ দিকে ছুটছে। ডানদিকে জাতীয় সংসদ ভবন আর বাম দিকে মনিপুরীপাড়া। ইমরান আর মার্টিন উঠে দাঁড়ায়। মনিপুরীপাড়া এলে ইমরান তার বাসায় ফিরে যাবার কথা ভুলে যায় যেন। এখানে এসে আড্ডা দিতে কারো সাথে তার পূর্ব পরিচয় থাকতে হয় না। এলাকায় তার বয়সের যারা আছে তাদের সাথে কোন অজুহাতে দাঁড়াতে পারলে মূহুর্তের মধ্যে বন্ধু হয়ে যায় সবাই। এলাকার ছেলে মেয়ে উভয়েই বেশ বন্ধু সুলভ, আন্তরিক। তবে মার্টিনের কারনেই তার প্রথম এই এলাকায় এসে আড্ডা দেওয়া হয়, এটা অস্বীকার করার কিছু না। এখন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াদের কেউই বাদ নেই যে নাকী তার অপরিচিত। তাই ভাবে, বাস থেকে নেমে বাসায় সরাসরি না গিয়ে মার্টিনের সাথে তাদের পাড়ায় কিছু সময় আড্ডা দিয়ে তারপর যাবে বাসায়। ভাবতে ভাবতে নীচে নেমে আসে।


খেজুর বাগান আর ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের মাঝখানের মোড়ে এসে বাস থামলে গেইটে ভীড় লেগে যায়। অনেকেই নামার জন্য গেইটে দাঁড়ায়। বাস পুরোপুরী থামছিল না। কয়েকজন যাত্রী চালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, – ড্রাইভার সাব গাড়ি না থামালে তো নামতে পারছি না। থামিয়ে নামিয়ে দিয়ে যান। না হলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
কন্ডাক্টর যাত্রীদের ধমকাতে শুরু করে, – আরে নামেন তাড়াতাড়ি। কি শুরু করেছেন আপনারা গেইটে। আগে ডান পা দেন। ডান পা দিয়ে নামেন। রাস্তার উপর বেশী সময় গাড়ি দেরী করানো যাবে না।


বললে যাত্রীদের কেউ কেউ ডান পা আগে দিয়ে নামলেও কয়েকজন পুরো না থামানো পর্যন্ত নামছিলেন না। বাস আরো সামনে এগিয়ে গেলে যাত্রীরা চিৎকার চেচামেচী শুরু করেন।


ইমরান মার্টিনকে বলে, আগে নামতে। বলেই জোড়ে ডাক দিয়ে বলে, – এই যে ড্রাইভার, গাড়ি না থামালে নামবো কি করে?
ইমরান বললে কন্ডাক্টর শুরু করেন তর্ক, – এই মিয়া, গাড়ি রাস্তার উপর আর কিভাবে থামাবে?

এই সাবধানে কথা বলো। প্রতিটি যাত্রীকে সুন্দর করে নামিয়ে দিয়ে তারপর গাড়ি চালাতে শুরু করবে। এই গাড়িতে সবাই বেশী টাকা দিয়ে সুবিধার জন্য টিকিট কেটে উঠেছে। অন্য গাড়ির মত বাদুর ঝোলার মত চড়েনি।


গেইটে হৈচৈ শুরু হলে সেখানে যারা নামার জন্য অপেক্ষা করছিলেন তারাও ইমরানের কথায় সমর্থন দিয়ে বলে, – ভাড়া কি আমরা কম দিয়েছি নাকী? থামাতে বলো। এরপর কন্ডাক্টর চেচিয়ে বলেন, – ওস্তাদ, নামিয়ে দিয়ে যান। অনেক যাত্রী নামবো এখানে।

ঐ ব্যাটা তাড়াতাড়ি কর। কত সময় লাগে। বলে গাড়ি পুরো থামালেন চালক।
যাত্রীদের একে একে যাদের নামা দরকার সবাই নামার পর ইমরান নামে। নেমে মার্টিনকে বলে, – চলো তোমাদের পাড়ায় ঘুরে আসি। বাসায় গেলেই তো যাওয়া হবে। কিছু সময় বাইরে আড্ডা দিয়ে তারপর বাসায় যাবো। মার্টিন কোন প্রতিউত্তর না করে পাড়ার দিকে হাটতে শুরু করে।


যাবার পথে কয়েকটা চায়ের দোকান পাশাপাশি, সেখানে অনেকেই জটলা করছে। ইমরান তাদের পেয়ে মার্টিনকে বলে, – তুমি তারা থাকলে চলে যেতে পার। আমি এখানে ওদের সাথে দাঁড়াই। আর চাইলে তুমিও থাকতে পার।


মার্টিন বলল, – আমি দোস্ত চলে যাই। ভাল লাগছে না। পরে না হয় কল দিও। আর যদি এর মধ্যে বেড়াতে যেতে চাও তাহলে আমাকে আগে থেকে বলো। বলে জটলায় আর মার্টিন যোগ দেয় নি, সে তার মত চলে যায় বিদায় নিয়ে।


ইমরান ঘনিষ্ঠ একজনকে সেখানে পেয়ে বলে, – ঐ ব্যাটা চা খাওয়া।

কিরে দোস, তোর বাবা কি চলে গেছে নাকী? একজন প্রশ্ন করে।

সে তো কবেই গেছে?

এবার তো বললি ও না। শুনেছি তুই নাকী চলে যাচ্ছিস বাইরে?

চলে যাবো ঠিক আছে। কিন্তু আমি কিছু জানার আগে তুই জানলি কার কাছে?

খবর কি আর গোপন থাকে নাকী?
চাওয়ালাকে একটা লাল চা দেবার কথা বলে ইমরান তার বিদেশ যাবার বিষয় নিয়ে কথা বলে। বলে বাবা বাইরে আছে যেহেতু বাইরে যাবার চিন্তা তো মাথায় আসতেই পারে। তবে সেটা কবে বা কোন দেশে সে বিষয়ে এখনও আলোচনাই হয়নি।


সাথের একজন প্রশ্ন করে, তোদের কলেজের ডিপার্টমেন্টের সামনে দেখলাম ব্যানার লাগানো রয়েছে, তোরা আগামী মাসে পিকনিকে যাচ্ছিস মনে হয়?

প্রস্তুতি চলছে। যাবি নাকী?

ডিপার্টমেন্টের বাইরের গেস্ট কি এলাউ হবে?

একজন করে গেস্ট এলাউ।

তাহলে তো আমি বাদ পরবো এমনিতেই।

কেন? যেতে চাইলে ব্যবস্থা হবে। একজন গেলে যে খরচ দুই জন গেলে আই মিন গেস্ট নিয়ে গেলে একজনরে অর্ধেক।

সে ক্ষেত্রে তো তোর গেস্ট আছেই। তাকে ছাড়া কি আর আমরা সুযোগ পাবো?

কি বলছিস তুই।
-শারমিন কে তো তুই নিবি মনে হয়।
পাশে দাঁড়ানো কেউ কেউ প্রশ্ন করে, – ডুবে ডুবে এই করা হয় বুঝি? শারমিন কে রে?
শারমিন নামে ওদের ডিপার্টমেন্টের একটি মেয়ে সব সময় ইমরানের সাথে ঘুরে বেড়ায়। লাইব্রেরী, কফি হাউজ, কিম্বা কখনও কখনও একই বাসে পাশাপাশি বসে আসা যাওয়া। বিষয়টি অনেকেই খেয়াল করলেও ইমরান শারমিনকে কেবলই তার ক্লাস ফ্রেন্ডই মনে করে, তার বেশী কিছু না। তাই শারমিনের নাম বলাতে কোন তর্কে না গিয়ে বলে, শারমিন তো ডিপার্টমেন্টের ছাত্রী হিসেবে এমনিতেই যাবে। পারলে তার গেস্টই হয়ে চল। আমি না হয় অন্য কাউকে খুঁজি। গেলে বেশ মজা হবে। বলে এগিয়ে গিয়ে ইমরান তার চায়ের কাপ নিয়ে আসে।
(চলবে) —–

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দ্বিপ্রহর ডট কম-২০১৭-২০২০
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazardiprohor11