1. mdabirhossain.6894@gmail.com : Abir Hossain : Abir Hossain
  2. info@diprohor.com : admin :
  3. bappi.kusht@gmail.com : Bappi Hossain : Bappi Hossain
  4. biplob.ice@gmail.com : Md Biplob Hossain : Md Biplob Hossain
  5. mahedi988.bd@gmail.com : Mahedi Hasan : Mahedi Hasan
  6. mamunjp007@gmail.com : mamunjp007 :
  7. media.mrp24@gmail.com : এস এইচ এম মামুন : এস এইচ এম মামুন
  8. rakib.jnu.s6@gmail.com : Rakibul Islam : Rakibul Islam
  9. mdraselali95@gmail.com : Rasel Ali : Rasel Ali
  10. rockyrisul@gmail.com : Rocky Risul : Rocky Risul
  11. rouf4711@gmail.com : আব্দুর রউফ : আব্দুর রউফ
  12. sohan.acct@gmail.com : Sohanur Rahman : Sohanur Rahman
নুহাশ পল্লীতে একদিন (পর্ব-২৬): পি. আর. প্লাসিড | দ্বিপ্রহর ডট কম
রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৫:২৭ অপরাহ্ন

নুহাশ পল্লীতে একদিন (পর্ব-২৬): পি. আর. প্লাসিড

পি. আর. প্ল্যাসিড
  • আপডেট টাইম: শনিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২০
  • ৪৪৫ বার পঠিত

নুহাশ পল্লীর গেইটে দাঁড়িয়ে সাবায় যে যার মত করে ছবি তোলায় ব্যস্ত। ইমরান দূর থেকে তাকিয়ে থাকে মারীয়ার দিকে। মারীয়া তার সাথে কথা বলছে না দেখে নিজের ভিতর কষ্ট লূকিয়ে রেখে অভিনয় করে সবার সাথে কথা বলার চেষ্টা করে। অন্য দিকে মারীয়ার বাবা আর ইমরানের মা দু’জন মিলে সবার জন্য গেট পাস কেনার জন্য কাউন্টারের দিকে এগিয়ে যান। সেখানেও দুটো চায়ের দোকান। মারীয়ার মা চা খাবার কথা বললে এক দোকানদার প্রশ্ন করেন, – আপা চা কয়টা দেবো? সব কয়টাই কি দুধ চা হবে?


আনিকা চা ওয়ালার প্রশ্নের উত্তর দেবার জন্য হাত উচিয়ে ইশারায় বলে তাকে থামতে। এরপর সবার ছবি তোলা হলে জানতে চায় কে কে চা খাবে আর কে কে কোল্ড ড্রিংকস খাবে। চারজন চায়ের কথা বললেও কোল্ড ড্রিংকস কেউ অর্ডার করে নি।


এরমধ্যে মারীয়ার বাবা টিকিট কেটে এনে সবার হাতে যারযার টিকিট দিয়ে গেইটের দিকে এগিয়ে যান। গেইটে দাঁড়োয়ান বসা। সাথে আরো দু’ তিনজন লোক বসে আড্ডা দিচ্ছিল। দাঁড়োয়ান সবার টিকিট নিয়ে অর্ধেকটা ছিড়ে নিজের কাছে রেখে দেয়। বাকীটা ফিরিয়ে দিলে তারা ভিতরে ঢুকতেই দেখে একদল ছেলে বামদিকে সবুজ ঘাসের উপর ক্রিকেট খেলছে।


ইমরান দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে, – স্যার বেঁচে নেই বলে এর রক্ষণাবেক্ষণ কেউ মনে হয় সঠিক ভাবে করছে না। করলে ওরা এখানে ক্রিকেট খেলে মাঠের ঘাস নষ্ট করতে পারতো না। সামনে সামান্য এগুতেই বিশাল আকারে হুমায়ুন আহমেদের ছবি বানানো রয়েছে। সাথেই বিশাল সাদা রঙ্গের একতলা একটি দালান ঘর। স্যার এখানে আসলে এই ঘরে থাকতেন সেটা সামনে নোটিশ বোর্ডে লেখা রয়েছে। নোটিশ বোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে সবাই এক নজর ভিতরে পুরো এলাকা মনের মধ্যে গেঁথে নেয়।


মাঝখানে পায়ে হাটার জন্য শরু পাকা পথ। পথ ধরে সামনে উত্তর দিকে হাটতে হাটতে তারা নুহাশ পল্লীর আরো ভিতরে চলে যায়। আশেপাশে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে ভিতরের পরিবেশ নিয়ে আলোচনা করে। মারীয়া আর তার ছোট ভাই পিছনে সবার থেকে আলাদা হয়ে আস্তে আস্তে হাটে। অন্য সবাই জটলা করে একসাথে হাটে। হাটার সময় একজনের সাথে আরেকজনের গায়ে ঘেষা লাগে। মারীয়া তার ভাইয়ের সাথে নুহাশ পল্লী নিয়ে কথা বলে আর থেকে থেকে তার মা আর মার্টিনকে কাছাকাছি হয়ে হাটা দেখে।


মায়ের সাথে মার্টিনকে এভাবে ঘেষে হাটতে দেখে মারীয়ার খুব রাগ হয়। মনে মনে ভাবে তার বাবা কেন দেখছে না বিষয়টি। আবার ভাবে, বাবা বলবে কি, সে নিজেই ইমরানের মার সাথে যে ভাবে হাটছে সেটাও ভাল লাগে না তার কাছে। মারীয়া কোন ভাবে তার মার বিষয়টি মানতে পারে না। একসময় তার মাকে ডাকে মারীয়া। মারীয়ার ডাক তার কানে যায় না। তার ছোট ভাই মারীয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে সে তার মাকে ডাকে আর একা একাই রাগ করে কি যেন বলছে বিরবির করে। দেখে সে দৌঁড়ে গিয়ে তার মাকে ধরে পিছন দিকে টেনে দাঁড় করিয়ে বলে, – আপু তোমাকে ডাকছে।


মারীয়ার মা সেখানেই দাঁড়িয়ে মারীয়ার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করেন, – কিরে, কি হয়েছে?
মারীয়া চোখ বড় করে মায়ের দিকে তাকালেও কথা বলে না। ছোট ভাই কোন কিছু না বুঝলেও তার আপু যে কোন কারণে রাগ করছে তা বুঝতে পেরে তার মাকে বলে, – তুমি আমাদের সাথে হাট। ওরা যাক। বলে মারীয়ার কাছে আসা পর্যন্ত তার মাকে হাটতে দেয় না।
রাস্তার ধারে একটা বট গাছ, সেটার ঢালপালা রাস্তার উপর ছড়িয়ে ছায়া দিচ্ছে। সেখানে সবাই দাঁড়িয়ে একট জিরিয়ে নেয়। ইমরান তার মোবাইল দিয়ে সেখানে সবার ছবি নেয়। এরপর আরেকটু সামনে যেতেই দেখে পুরোনো কিছু ঘর বাড়ি সেখানে। সামনে দুটো গাই গরু বাঁধা। খোয়ারে মুখ ডুবিয়ে ঘাস আর পাতা লতা খাচ্ছে। আশেপাশে কিছু মুরগী মাটি ঘুটে খাবার খাচ্ছে। দেখে মনে হয় পুরো গ্রামের পরিবেশ।
ঘরবাড়ি গুলো দেখে মার্টিন বলে, – আমার মনে হয় ওরা এখানকার আদী বাসিন্দা। ওদের কাছ থেকেই এই জমাজমি কিনেছেন হয়তো হূমায়ুন স্যার। একারণে শর্ত সাপেক্ষে হয়তো তাদের এখান থেকে তুলে না দিয়ে ঘর গুলো সেভাবে রেখেই তাদের থাকার ব্যবস্থা করেছেন।


মুরগী গুলো মাটি ঘুটে নিজেদের খাবার নিজেরা খুঁজে খাচ্ছে আর করকর করে গলা দিয়ে শব্দ বের করে তাদের কাছে আসছে। হয়তো মুরগী গুলো তাদের কাছ থেকে কোনো খাবার পাবার আশায় কাছে আসে। সামনে একটা বড় ঘরের বাইরে কবুতরের ঘর। সেখানে অনেক গুলো কবুতর বাকবাকুম বাকবাকুম করছে। দু’ একটা উড়ে উড়ে নীচে নামছে আবার কিছু নীচ থেকে উপরে ঘরের চালে গিয়ে বসছে। আনিকা বলে, – এই সেই কবুতর। যে কবুতর নিয়ে স্যার তার বইতে লিখেছেন।


মারীয়ার ছোট ভাই কবুতর দেখে দৌঁড়ে ধরতে যায়। তার ভয়ে কবুতর লাফ দিয়ে অল্প একটু উড়ে সামনে গিয়ে আবার ঘাসের উপর বসে। কবুতরের সাথে মারীয়ার ছোট ভাই খেলতে থাকলে নাহিয়ানও গিয়ে ওর সাথে যোগ দেয়। একজোড়া কবুতর কারো দিকে নজর না দিয়ে প্রেম করছিল। সেটা দেখে ইমরান মারীয়ার চোখের দিকে তাকায়। তাকিয়ে দেখে ওর নজর কোন দিকে।


একটু ঢালুতে নামে সবাই। সেখানে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে টাল করেছে। টালের মধ্যে লাউ আর করলার গাছ বেয়ে ছেয়ে আছে। সেটার নীচ দিয়ে আরো উত্তরে যেতেই চোখে পড়ে বড় পুকুর। সেখানে বেশ কিছু অল্প বয়সী ছেলে মেয়ে জড়াজড়ি করে বসে গল্প করছে। কেউ কারো দিকে তাকাচ্ছে না। ওদের দেখে ইমরানের মা কিছুটা লজ্জা পেয়ে বলেন, – আজকালকার ছেলেমেয়েদের লাজ শরম বলতে যেন কিছু নেই।


সামনে গিয়ে দেখে পুকুরের মাঝ খান পর্যন্ত যাবার মত কাঠের তৈরী ব্রীজ। সেখানে গিয়ে ছোট একটি দ্বীপের মত করা মাটির ঢিবি। সেখানেও বসে গল্প করতে পারবে পর্যটক। সামনে একটি ইটের গাথুনী দিয়ে তার উপর পাথরে কালো কালিতে লেখা ” দিঘি লীলাবতী” (নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে রয়েছ নয়নে নয়নে)। সেখানে দাঁড়িয়ে আনিকা ছবি তোলেন। আরো সামনে একটা পাঁকা দালান ঘর যার উপর লেখা রয়েছে, ” ভূতবিলাস ”। ভূতবিলাসের আশেপাশে বড়বড় বিভিন্ন ধরনের গাছ। অনেকটা কৃত্রিম জংগল তৈরী করা হয়েছে। সেখানে মার্টিন মারীয়ার মাকে নিয়ে জঙ্গলের ভিতর ঢুকে যায়। মারীয়ার বাবা ইমরানের মাকে নিয়ে উল্টোদিকে পুকুরের ওপারে চলে যান কথা বলতে বলতে। কাছেই মৎস্য কন্যার বড় সাদা একটি মূর্তি। নাহিয়ান আর মারীয়া তাদের ছোট ভাইকে নিয়ে মৎস্য কন্যার মূর্তির সামনে এসে খেলতে থাকে।

মরান উপায় না দেখে আনিকাকে নিয়ে পুকুরের মাঝখানে কাঠের পুলের উপর দাঁড়িয়ে আশে পাশে বসে জড়িয়ে ধরে কথা বলা ছেলেমেয়েদের দেখে আর রোমান্টিকতা করার চেষ্টা করে। কিছুক্ষণ পর মারীয়ার মা আর মার্টিন বেরিয়ে আসলে মারীয়া তার মার সাথে মুখ ফুলিয়ে রাগ করে কি যেন বলতে থাকে। তার মা কোন উত্তর না দিয়ে মেয়ের দিকে তাকিয়ে থাকে শুধু। ইমরানের মা মারীয়ার বাবাকে পেয়ে যেন পুরোনো আবেগ জেগে উঠে তার মধ্যে। তাই দুজন দূরে গিয়ে কথা বলতে থাকেন।
মারীয়া তার মাকে নিয়ে উপর দিকে উঠে আসলে দেখে সেখানে বিশাল বড় আরেকটি ঘর। সামনে লেখা বৃষ্টিবিলাস। সামনে কয়েকটি দোলনা বানানো। দোলনায় বসে সে দুলছে আর তার ছোট ভাই পিছন দিক থেকে ধাক্কা দিচ্ছে। নাহিয়ান আর তার মা বৃষ্টিবিলাসের বারান্দায় উঠে দেখে কয়েকজন লোক সেখানে একটা বড় টেবিলের উপর খাবার নিয়ে বসে আছে।


লোক গুলো প্রশ্ন করেন, – আপনারা কিছু খাবেন?


মার্টিন এগিয়ে এসে জানতে চায়, – কি কি আছে খাবার। তখন লোক গুলো জানতে চান, – আপনারা কতজন?


মার্টিন বলল, – দশজন।খাবার তো প্রায় শেষ। যা আছে তা দিয়েই খেতে হবে।

সে না হয় বুঝেছি। কিন্তু আছে কি কি?

আলুর ভর্তা, গুরা মাছের চচ্চরি, পেঁপে ভর্তা, ডাল।

যা আছে পুরোটাই দেন। আর মিনারেল ওয়াটার দেন।
মার্টিন লোকগুলোর সাথে কথা বলে বেশ ভাব জমিয়ে তুললে একজন বয়স্ক লোক কাছে এসে তাদের টেবিলে যে লোক খাবার পরিবেশন করছিলেন তাকে দেখিয়ে বলেন, – ওনি স্যারের বাবুর্চী ছিলেন। স্যার এখানে আসলে উনি রান্না করে স্যারকে খাওয়াতেন।


শুনে মার্টিন লোকটিকে জড়িয়ে ধরে বলে, – আপনি তো তাহলে একজন জীবিত ইতিহাস। আপনার সাথে পরে ছবি তুলতে হবে। আপনার নাম আর মোবাইল নাম্বারটা দিবেন প্লিজ। পরে অন্যসময় যোগাযোগ করবো। লোকটি মার্টিনের কথায় হাসেন। এরপর টেবিলে সব খাবার দিয়ে পানির বোতল এনে দেন।

(চলবে)……..

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দ্বিপ্রহর ডট কম-২০১৭-২০২০
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazardiprohor11