জীবনে কতো ডাক্তারের সাথেই না সকলে পরিচিতি হয়েছেন। তাদের মধ্যে কারো নাম ভুলে গেছেন, কারো নাম মনে আছে। আবার কতোজনের সাথে ভবিষ্যতে পরিচিত হবেন, তাদের কারো নাম মনে থাকবে, কারো নাম মনে থাকবে না। এটাই নিয়ম। আজ আমি এমন একজন ডাক্তারের নাম বলব যে নামটি জীবনে কেউ কোন দিনও ভুলবেন না। এই নামটি মনে থাকার কারণে ভবিষ্যতে অনেক ডাক্তারের সাথে পরিচয় হবার দরকারও কমে আসবে। সেটাই ভাল। ডাক্তার আর উকিলের কাছেতো কেউ খামোখা যায়না, যায় বিপদে পড়ে।
যে ডাক্তারের কথা বলছি সে ডাক্তারটিকে সদা সর্বদা মনের গভীরে স্থান দিয়ে রাখবেন। হাঁটতে, চলতে ফিরতে, বেড়াতে এমনকি ঘুমের সময়েও ডাক্তারটিকে সাথে নিয়ে ঘুমাবেন। খুব ভাল ডাক্তার। আপনার স্বামী, স্ত্রী, বাবা-মা বা আত্মীয়-স্বজন কেউ-ই মাইন্ড করবে না বরং খুশীই হবে। আপনারমতো তাদেরকেও বলবেন যেন ডাক্তারটিকে সদা সর্বদা সাথে রাখে।
ডাক্তারটির নাম যুক্তিযুক্ত। কি কেঁপে উঠলেন! না, কাঁপাকাপির কিছু নেই। ডাক্তারটির নাম যুক্তিযুক্ত নয়, তার নাম DR.ABC। নিচেয় ইংরেজিতে যে শব্দগুলি লেখা আছে তার প্রত্যেকটির প্রথম অক্ষরকে একত্র করলে হয়, ডা. এবিসি। যে কোন ধরণের হঠাৎ শারিরীক অসুস্থতায় যে যে কাজগুলি তাৎক্ষণিকভাবে আপনাকে করতে বলবে এই ডাক্তারটি সেগুলি আপনাকে বলে দেবে। একটু খেয়াল করে শুধু মনে রাখুন। মনে মনে ধরে নেন হঠাৎ করেই কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েছে, ডাক্তারের কাছে নেবার পূর্ব পর্যন্ত বা ডাক্তার রোগীর কাছে আসার পূর্ব পর্যন্ত তাৎক্ষণিকভাবে কি করবেন? মরে রাখুন DR.ABC।
Danger check: রোগীর অবস্থা কতটা মারাত্মক তা পরীক্ষা করা। প্রাথমিকভাবে হাতের পালস, রক্তের চাপ দেখা এবং আপনার স্বাভাবিক বুদ্ধি বিবেচনা ও ধারণা দিয়ে রোগীর অবস্থা অনুমান করা এবং সে অনুযায়ি যতোটা সম্ভব রোগীকে সাহায্য করা।
Responsiveness: রোগী কতটা অনুভূতিতে সাড়া দেয় তা পরীক্ষা করা। কথা বললে সাড়া দেয় কিনা সেটা দেখা। যদি সাড়া না দেয় তবে ত্বকে চিমটিমতো কেটে বা চাপ দিয়ে মুখমন্ডলে কোন অভিব্যক্তি হচ্ছে কি না, তা খেয়াল করা।
Airway open: শ্বাস প্রশ্বাসের অবস্থা কি তা পরীক্ষা করা এবং প্রয়োজনে মুখ খুলে রেখে শ্বাসনালী সোজা করে পর্যাপ্ত শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করা।
Breathing support if not happening normally: শ্বাস প্রশ্বাসের অবস্থা পরীক্ষা করে যদি তা স্বাভাবিক না পাওয়া যায় তবে দ্রুত অন্ততঃ ২ বার কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করা। শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হলে বুকের উপর চাপ দিয়ে তার ব্যবস্থা করা। বুকের ঠিক মাঝখান বরাবর সেকেন্ডে ২টি করে ৩০ টি চাপ দিয়ে কৃত্রিম শ্বাস প্রস্বাসের ব্যবস্থা করা। এভাবে ২ বার বিকল্প ও কৃত্রিম শ্বাসের ব্যবস্থা করা দরকার।
CPR – Cardiopulmonary Resuscitation: হৃতপিন্ড ও ফুসফুসের অবস্থা পরীক্ষা করে যদি তা স্বাভাবিক না পাওয়া যায় তবে ডাক্তারের কাছে নেবার পূর্ব পর্যন্ত তা স্থিত অবস্থায় রাখার চেষ্টা অব্যাহত রাখা।
(যুক্তিযুক্তের লিখিত এবং অন্বেষা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত ‘হঠাৎ অসুস্থতায় জরুরি চিকিৎসা’ গ্রন্থ থেকে সঙ্কলিত)