1. mdabirhossain.6894@gmail.com : Abir Hossain : Abir Hossain
  2. info@diprohor.com : admin :
  3. bappi.kusht@gmail.com : Bappi Hossain : Bappi Hossain
  4. biplob.ice@gmail.com : Md Biplob Hossain : Md Biplob Hossain
  5. mahedi988.bd@gmail.com : Mahedi Hasan : Mahedi Hasan
  6. mamunjp007@gmail.com : mamunjp007 :
  7. media.mrp24@gmail.com : এস এইচ এম মামুন : এস এইচ এম মামুন
  8. rakib.jnu.s6@gmail.com : Rakibul Islam : Rakibul Islam
  9. mdraselali95@gmail.com : Rasel Ali : Rasel Ali
  10. rockyrisul@gmail.com : Rocky Risul : Rocky Risul
  11. rouf4711@gmail.com : আব্দুর রউফ : আব্দুর রউফ
  12. sohan.acct@gmail.com : Sohanur Rahman : Sohanur Rahman
নুহাশ পল্লীতে একদিন (পর্ব-৯): পি. আর. প্ল্যাসিড | দ্বিপ্রহর ডট কম
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২২ পূর্বাহ্ন

নুহাশ পল্লীতে একদিন (পর্ব-৯): পি. আর. প্ল্যাসিড

পি. আর. প্ল্যাসিড
  • আপডেট টাইম: মঙ্গলবার, ১৭ মার্চ, ২০২০
  • ৩৬৯ বার পঠিত

গেইট পেরুলেই বিশাল বড় খালি জায়গা। জায়গা জুড়ে সবুজের সমাহার। সেখানে দশ পনরজন ছেলে, বয়স খুব বেশী হলে পনর হবে, ওরা ক্রিকেট খেলছে। ওদের খেলা দেখার জন্য বয়স্ক কিছু লোক কাছে দাঁড়িয়ে। ইমরান নোট খাতায় তার নাম ঠিকানা লেখে বেড়িয়ে এসে কিছু সময় সেখানে দাঁড়িয়ে খেলা দেখে। তার মধ্যে কোন তারা নেই। সে ভাবে বাসায় মেহমান আছে, তাদের নিয়ে বাসায় সবাই ব্যস্ত। সে গেলে বাড়তি ঝামেলো হতে পারে বাসায় তাই ব্যস্ততা কিছুটা কাটলে সে যাবে, মনে করে।


একটি বিল্ডিং এর নীচে সাদা আর লাল দুটো টয়োটা প্রাইভেট গাড়ি পার্কিং করা। গাড়ি দুটো দেখে সে মনে করে মারীয়াকে যারা দেখতে এসেছে তারা নিশ্চয়ই এই গাড়ি গুলোয় চড়ে এসেছে। গাড়ি দুটো ভালো করে দেখে, এখনও বেশ নতুন। ভিতরে চোখ দেয়, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নই মনে হয়। ভাবে, যারা দেখতে এসেছে ওরা নিশ্চয় বড়লোক হবে। না হলে গাড়ি নিয়ে আসতো না। গাড়ি দেখে ওদের সাথে ইমরান নিজের অবস্থান তুলনা করে মনে মনে।


উপরে তিনতলার এক বাসার জানালায় কম বয়সী এক মেয়ে দাঁড়িয়ে মাঠের দিকে তাকিয়ে আছে। মেয়েটি মারীয়া কি না সে বুঝে উঠতে পারছিল না। বেশ কয়েক বছর আগে দেখেছে সে মারীয়াকে, এতদিন অনেক বদলে গেছে। তাই ঠিক ধরতে পারে না কে মেয়েটি।


মারীয়ারও মনে নেই ইমরানের চেহারা। তারপরেও যেহেতু গেইট থেকে ফোন করে তার আসার কথা বলেছে সুতরাং অনুমান করে চিনে নিতে পারবে মনে করে জানালায় দাঁড়িয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। ইমরান কি মনে করে একবার উপর দিকে তাকায়। তাকাতেই দেখে জানালার গ্রীল ধরে দাঁড়িয়ে হাসি হাসি চেহারা করে কিচু একটা বলতে চাইছে। সাথে আট নয় বছর বয়সের একটি ছেলে।


মারীয়ার এই বয়সের কোন ভাই নেই সে জানে কিন্তু এই ছেলে কে হতে পারে ভাবে। যেহেতু বাসায় মেহমান আছে সে জানে তাই ছেলেটি মেহমানদের কেউ হবে মনে করে। তাছাড়া এই জানালাও যে মারীয়াদের বাসার সেটা সে ধারণা করেই সব অনুমান করছে। উপর দিকে তাকাতেই ইমরানকে তাকাতে দেখে ওরা নড়ে দাঁড়ায়। ইমরানকে দেখে মারীয়া হাত নাড়ে।


খালি জায়গার মধ্যে ছেলেদের ক্রিকেট বলের পিছনের ছুটে যাওয়া আবার দুই হাত উচিয়ে চেচিয়ে আনন্দ করা ইমরানের কাছে ভাল লাগে। তার ইচ্ছে করে এখনই ওদের সামিল হতে। কিন্তু কাউকেই সেখানে সে না চেনার কারণে এগিয়ে খেলার গ্রাউন্ডের কাছে যায় না।


উপর থেকে হাত নাড়তে দেখে ইমরান ধরে নেয় তাকে উদ্দেশ্য করে হাত নাড়ছে। আসলে তাকে উদ্দেশ্য করে নয়। হাত নাড়ার সাথে যখন উপর থেকে মারীয়া জোড়ে ডাকে নাহিয়ান বলে তখন বুঝতে পারে সেখানে তার ভাইও খেলছে। নাহিয়ান ইমরানকে চিনে না। ইমরানও না। প্রথম উপর দিকে ইমরান তাকিয়ে মারীয়াকে অনুমান করলেও এবার নাহিয়ানকে চেচিয়ে ডাক দেওয়াতে শিউর হয় এটাই মারীয়া।


ইমরান নীচ থেকে হাত নাড়ে। ইমরানের হাত নাড়া দেখে মারীয়া ভিতরে চলে যায়। ইমরান এবার খেলা না দেখে তিনতলার সেই জানালার দিকেই মারীয়ার ফিরে আসা দেখার জন্য তাকিয়ে থাকে। একটুপর মারীয়ার মা আসেন জানালার কাছে। মারীয়ার মা এসে ইমরানকে ইশারা করে ডাকেন। ডেকে বলেন, – এই, দেরী করছো কেন? তোমার আংকেল তোমার জন্য অপেক্ষা করছে। বলেই আবার বলেন, – মাঠে নাহিয়ান আছে, ওকে সাথে ডেকে নিয়ে আস ।


ওদের খেলার মধ্যে ইমরান গিয়ে বিরক্ত করবে কি করবে না ভাবে। খেলা বেশ জমিয়েছে সবাই। খেলার মাঝখান থেকে একজন খেলোয়ারকে তুলে নিলে সবার মন ভেঙ্গে যেতে পারে মনে করে সে একপা দুইপা করে মাঠের দিকে এগিয়ে যায়। ওদের মধ্যে কে নাহিয়ান সেটা বুঝতে সময় লাগছে। একজনকে ডেকে জানতে চায়, এখানে তাদের মধ্যে কার নাম নাহিয়ান।


ইমরান যে এখানে এসে খেলা দেখছে আর উপর দিকে তাদের বাসার জানালার দিকে ফলো করছে নাহিয়ান পুরোটা শুরু থেকে খেয়াল করছিল। তাই ইমরানকে তাদের খেলার মাঠে এসে তাদেরই একজনকে ডেকে কথা বলতে দেখে সে এগিয়ে আসে। এসে বলে, – ভাইয়া আপনি বাসায় যান, আমি আসছি। উপর দিকে তাকিয়ে ইমরান দেখে. তার মা কি যেন ইশারা করে বলছে। এত দূর থেকে কোন কথাই শোনা যায় না। ইমরান নাহিয়ানকে বলে, – তোমার মা কি যেন বলছে, তুমি এগিয়ে গিয়ে শুনে আস।


নাহিয়ানের হাতে ব্যাট। সে ব্যাট উচিয়ে চেচিয়ে বলে, – মা আমি খেলা শেষ করে আসছি। তার মা তার কথা শুনেছে কি শোনে নি সেটার কোন নিশ্চয়তা নেই। তবুও সে বলেই আবার ইমরানকে বাসায় যেতে বলে। ইমরান বাসায় যাবার জন্য ঘুরে দাঁড়ালে সে আবার দৌঁড়ে গিয়ে খেলায় ডুবে যায়।


ইমরান তার বন্ধুকে বলে পরিবেশটা কত সুন্দর, তাই না? বিশাল জায়গা খালি পরে আছে। ঢাকা শহরে এমন খালি জয়গা আজকাল নেই বললেই চলে। উন্মোক্ত আলো বাতাস। বাসা থেকে বাইরে তাকালেই সবুজের ছড়াছড়ি। কাছেই স্কুল, কলেজ, আবার কাঁচা বাজারও আছে। কাছে এয়ারপোর্ট। কি নাই। ধর্মপ্রাণদের জন্য মসজিদ। এখন থেকে সময় পেলেই এখানে এসে সময় কাটাবো।


ইমরানের বন্ধু তার সাথে আসলেও তখনও জানে না ইমরান যে ভিতরে ভিতরে মারীয়া নামের কারো জন্য তাদের বাসায় ছুটে আসছে। এতটা সময় কথা বলার পর বুঝতে পারে মারীয়ার বাবার সাথে কোন বিষয়ে আলোচনা করবে, এজন্যই এতটা সময় ব্যয় করে বাসায় আসা। এরপর এলাকার সামাজিক কর্মকান্ড নিয়ে মারীয়ার বাবার সাথে আলোচনা করে সবাইকে নিয়ে কিছু একটা করতে চায়। তার বেশী আলাপ করেনি ইমরান।


খেলার গ্রাইন্ড থেকে বিল্ডিংয়ের কাছে গিয়ে এদিক সেদিক তাকায় ইমরান। আরো সামনে গিয়ে দেখে উপরে যাবার জন্য কোন লিফট দেখা যায় কিনা। কোন লিফট না দেখে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে, – ঢাকা শহরে আজকাল লিফট ছাড়া কি আর বিল্ডিং হয়? নীচ থেকে ভালো করে একবার উপর দিকে উঠার সিঁড়ি দেখে।


সিঁড়ি ঘুরে ঘুরে উপরে উঠলেও রেলিং দেখে বোঝা যায়, কেউ তেমন যতœ করে না যে। পুরোটা অপরিষ্কার, অমসৃণ, তাই বলে এখানে এত বড়লোকদের বসবাস অথচ কারো যেন খেয়াল নেই বিল্ডিং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার। সিঁড়ির রেলিংয়ে হাত দিয়ে উপরে এক পা এগিয়ে সিঁড়ির উপর রেখে বাম পা উপরে তোলার আগেই ইমরান বলে, – ইস, এতটা সিঁড়ি ভেঙ্গে উপরে উঠতে হবে, দেখেই পা ব্যাথা করতে শুরু করেছে।


ইমরানের বন্ধু খিল খিলিয়ে হেসে বলে, – দোস্ত, বুঝছি, তোমাকে দিয়ে যে কাজ হবে না। সত্যি করে বলো তো শুনি যেখানে যাচ্ছি এরা তোমার কি হয়? তোমার প্রশ্নইতো আমি পরিষ্কার না, উত্তর দিবো কি?

এটুকু না উঠতেই তোমার পা ব্যাথা করতে শুরু করেছে, উপরে গেলে না জানি আর কি ব্যাথা শুরু হয়। বলেই আবার হাসি। হাসি দিয়ে বলে, – জানালায় দেখলাম যে, ওর জন্যই কি আসা নাকী? দেখার আগেই একটা ফয়সালা করে নেওয়া ভাল। আমি দেখার পর যেন আবার কোন কথা না শুনি।


ইমরান নিজেকে সাধু সাজাতে বলে, – আরে না দোস্ত, এমন কিছু না। তুমি যার কথা বলছ ওর নাম মারীয়া। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে।

তা না হয় বোঝলাম। এখন উঠতে যে তোমার পা ব্যাথা শুরু হয়েছে, নামার সময় আবার মনের ব্যাথা শুরু হবে না তো?


একটু একটু করে উপরে উঠতে থাকে। ইচ্ছে করলে ওরা দ্রুত উঠতে পারতো। ইমরান ইচ্ছে করেই থেমে থেমে উঠছে। এতবছর পর সে তার আংকেলদের বাসায় আসছে। সেখানে মূল আকর্ষণ তার কাছে মারীয়া। মারীয়া তাকে কেমন করে গ্রহণ করে সেটাই দেখার বিষয়। তার বন্ধুর সামনে যদি মারীয় তাকে আবার এড়িয়ে চলে তাহলে ফেরার সময় কোন গল্প তার সাথে করতে পারবে না মারীয়াকে নিয়ে।


মারীয়াকে বাসায় দেখতে এসেছে। ওর মনের অবস্থাও সে জানে না। তার চিন্তার সাথে মারীয়ার চিন্তার কোন মিল নাও হতে পারে। এরমধ্যে উপরে গেইট খোলার শব্দ পায়। ইমরান এবং তার বন্ধু একই সাথ উপর দিকে তাকিয়ে দেখে কাউকে দেখা যায় কি না। তখনো কাউকে দেখা যায় নি। কেউ গেইট খুলে যে বের হয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। তবে কোন গেইট বা কাদের ঘরের গেইট খুলেছে সেটা দেখা যায় না।


উপর থেকে মারীয়া উকি দিয়ে বলে কিনা যে, ভাইয়া এত দেরী করছেন কেন? বা এটুকু পথ আসতে এত সময় লাগছে কেন? এমন কোন প্রশ্ন করে কি না তা দেখার ও শোনার জন্য বারবার উপরের দিকে তাকাতে তাকাতে উঠতে থাকে। গেইট থেকে যেহেতু বলে দিয়েছে, তিনতলায় উঠে হাতের বাম দিকের গেইট মিরাজদের, তাই তিন তলায় উঠে বাম পাশের ঘরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কলিং বেল বাজায়।


গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে কলিং বেল বাজানোর পর ভিতর থেকে একজন মেয়ে কন্ঠে বলছে, – গেইট খোলাই আছে, ভিতরে আসেন। শুনেও ইমরান গেইটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে। ভিতরে না যেতে দেখে ভিতর থেকে কেউ একজন টেনে গেইট খোলে। পুরো গেইট খোলার আগেই দেখে মারীয়া। সে তার ডান হাত দিয়ে গেইটের অর্ধেকটা খুলে ধরে দাঁড়িয়ে আছে। ইমরান মারীয়ার দিকে তাকিয়ে দেখে। প্রথমেই চোখ যায় ওর বুকের উপর। সন্দর লাল একটা উড়না বুকের উপর ফেলে রেখেছে।
(চলবে) ———-

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দ্বিপ্রহর ডট কম-২০১৭-২০২০
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazardiprohor11